Banners

আহলে বাইয়াত

আহলে বাইয়াত, আহলে বায়াত,  পাকপাঞ্জাতনের কেন পাগল মানুষ?

নবীর পরিবার, ইমাম,উসিলায় দোয়া কবুল, নাজাতের তরী, সত্যবাদী, সত্যবাদীদের সঙ্গী

আল্লাহ বলেন, “স্মরণ কর সেই দিনকে যেদিন আমি প্রত্যেক ব্যক্তিকে তার ইমানের সাথে আহ্বান করবো। (সুরা বনী ইসরাইল-৭১)
“আমি সতরককারী এবং প্রত্যেক জাতির জন্য রয়েছে পথপ্রদশক। (সূরা রা’দ-৭)

নবী (সাঃ) বলেছেন, “যে ব্যাক্তি সময়ের ইমামকে না চিনে বা না জেনে মারা যায় সে জাহেলীয়াতে মারা যায়। (কানজুল উম্মাল ৩য় খন্ড পৃঃ ২০০, সহীহ মুসলিম ২ খন্ড পৃঃ ১’২৮, মাসনাদে হাম্বাল ৪থ পৃ:৯৬)

এখন কথা হলো কেউই মানবে না যে দুনিয়ার কোন রাষ্ট্র নায়ক বা বিচারককে না চিনে বা না জেনে মারা গেলে যে জাহেলীয়াতে মারা যায়।

হযরত জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ আনসারী (রাঃ) থেকে এক হাদীসে বর্ণিত হয়েছে যে, “উলিল আমর মানে আহলে বায়েতের মাসুম ইমামগণ এবং তাদের নামও বলে গেছেন তিনি।

যেহেতু দ্বীন ইসলাম কিয়ামত অবধি স্থায়ী থাকবে আর নবীর পর আর কোন নবীর আগমণ হবে না। এই জন্য নবী নিজ দায়িত্ব হতে অব্যাহতি পেতে আল্লাহর নির্দেশে বার জন স্থালাভিসিক্ত (খলিফা বা ইমামদেরকে) মনোনিত করে তাঁদের নাম উল্লেখ করে যান। নবী (সাঃ) এরশাদ করেন, “আমার পর দ্বীন ইসলামকে রক্ষা করতে কোরাইশ হতে বারজন ইমাম বা খলিফা হবে। (সুত্র: সহীহ আল-বুখারী, ৬ষ্ঠ খন্ড, হাদীস নং ৬৭১৬, আধুনিক প্রকাশনী; আবু দাউদ, ৫ম খন্ড, পৃঃ ২১৩২১৮; সহী মুসলিম ৫ম খ. হা. ৪৫৫৪ (ই.ফা.)।
আহলে সুন্নাতের প্রখ্যাত আলেম আল্লামা আলী হামদানী শাফায়ী বণনা করেন; আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস বলেন, আমি রাসূল (সাঃ)-কে বলতে শুনেছি আমি, আলী, ফাতেমা, হাসান এবং হোসাইনের পরবর্তী ৯ (নয়) সন্তানও পাক পবিত্র ও মাসুম। (মোয়াদ্দাতুল কুবরা, পৃঃ১৩১০ হিজরীতে বোম্বেতে মুদ্রণ)

উলিল আমরের সম্পর্কে জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ আনসারী হতে বর্ণিত যে, জুনদুব ইবনে (আবু জার)-এর প্রশ্নের জবাবে বলেন যে, আপনার পর কাঁরা আপনার স্থলাভিস্তি হবে তাদের নাম কি? নবী (সাঃ) ইমাম আলী হতে ইমাম মাহ্‌দী (আঃ) পযন্ত সকলের নাম বণনা করেন। তারে মধ্যে
১. ইমাম আলী
২.ইমাম হাসান,
৩. ইমাম হোসাইন
৪. ইমাম জয়নুল আবেদীন
৫. ইমাম মুহাম্মদ বাকের
৬. ইমাম জাফর সাদেক
৭. ইমাম মুসা কাজিম
৮. ইমাম আলী রেজা
৯. ইমাম মুহাম্মাদ তাকী
১০. ইমাম আলী নাকী
১১. ইমাম হাসান আসকারী এবং তাদের মধ্যে ১২. (বারতম) ইমাম মাহদী (আঃ) তিনি আরো বলেন, ওহে জাবের তুমি আমার ৫ম স্থলাভিসিক্ত ইমাম মুহাম্মাদ বাকের-এর সাক্ষাত পাবে, তাকে আমার সালাম পৌছে দিবে। (সুত্রঃ ইয়ানাবিউল মোয়াদ্দাত, পৃঃ৩৭০;মাতালেবাস সাউল, পৃঃ১৪)

আহলে বায়েত (আঃ)-ই আল্লাহপাকের রশি
এক গুচ্ছ পাট বা ছন দিয়ে কখনও রশি তৈরি হয় না দুই গুচ্ছ টাট বা ছনের প্রয়োজন পরে রশি তৈরি করতে, নবী পবিত্র কোরআনে সঙ্গে পবিত্র আহলে বায়েতকে দিয়ে আল্লাহ যে রশি তৈরি করে দিলেন আল কোরআনে সেদিকে ইঙ্গিত করে ঘোষণা করেছেন।
“আর তোমরা সকলে মিলে আল্লাহর রজ্জুকে আঁকড়াইয়া ধর পরস্পর বিচ্ছিন্ন (ফেরকাবন্দী হউও না।)” (সুরা আল ইমরান-১০৩)

হযরত ইমাম বাকের (আঃ) বলেছেন যে, হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-এর আহলে বায়েত (আঃ)-ই আল্লাহ পাকের মজবুত রজ্জু যাঁহতে আল্লাহ তায়ালা  দৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরার আদেশ দিয়েছেন (অনুসরণ করার জন্য)। সুত্র: ইয়া নাবিউল মুয়াদ্দাত পৃ”১৩৯, রুহুল মায়ানী আলূসী বাগদাদী ৪থ খন্ড, পৃ”১৬, নুরুল আবসার পৃ-১০২;তাফসীরে কুর্মী ১ম খন্ড পৃ: ১০৬, তাফসীরে ফুরাত, পৃ:১৪ এছাড়া আরো অনেক কিতাবে।
নবী (সাঃ) যেরুপ আল্লাহ নিকট প্রিয়তম ও সম্মানীত ছিলেন বা আছেন। ঠিক তদ্রুপ নবীর আহলে বায়েতগণও প্রিয়তম ও সম্মানীত।
অবশ্যেই আল্লাহ ও তার ফেরেস্তাদের নিয়ে নবীর প্রতি দরূদ পাঠ করেছেন। যে ঈমানদারগণ তোমরাও তাঁর প্রতি দরূদ ও সালাম পেশ করতে থাক। (সুরা আহযাব-৫৬)

এ আয়াতে অবতীণ হওয়ার পর সাহাবারা জিজ্ঞেস করলেন ইয়া রাসূলুল্লাহ আপনার উপর কিভাবে দরূদ পাঠ করতে হবে? উত্তরে নবীজি বলেন:“আল্লাহুম্মা সাল্লে আলা মুহাম্মদ ওয়া আলে মুহাম্মদ” তার পর তিনি বলেন: দেখ, তোমরা যে আমার উপর লেজ কাটা দরূদ না পড়। সাহাবারা বলনলন লেজকাটা কেমন? নবীজি উত্তরে বলেন, আমার আহলে বায়েত (আলী, ফাতেমা, হাসান ও হোসাইন(আঃ)-কে বাদি দিয়ে শুধু আমার উপর দরূদ পড়া। যেমন আল্লাহুম্মা সাল্লে আলা মুহাম্মাদ বলে চুপ থাকা। আমার ‘আহলেকে’ অবশ্যই সংপিক্ত করতে হবে। (সুত্র: জাজবায়ে বেলায়েত পৃ: ১৫৪, মাজমাউল বয়ান ৮ম খন্ড পৃ: ৩৬৯, মাসনাদে আহমদ ৫ম খন্ড পৃ: ৩৫৩, কানযুল উম্মাল ১ম খন্ড পৃ:-১২৪ ইত্যাদি।)

এ প্রসঙ্গে ইমাম শাফেয়ী (রহঃ) বলেন, হে! আহলে বায়েতে রাসূল! আপনাদের মুয়াদ্দাত (প্রাণদিক ভালবাসা ও অনুসরণ) পবিত্র কোরআনে ফরজ করা হয়েছে, যে ব্যক্তি নামাজে আপনাদের উপর দরূদ না পড়বে তার নামাজ নামাজই নয় (ইবনে হাজার মাক্কীর মাওয়ায়েকে মোহরেকা পৃ:-৮৮)

এখন প্রশ্ন জাগে নবী (সাঃ) ও আহলে বায়েত (আঃ) পাকদের উপর নামাজে দরূদ না পড়লে নামাজ কবুল হবে না। তাই নামাজের মধ্যে একটি সরতো হচ্ছে তাঁদের উপর দরূপ পড়তে হবে। যাদের উপর দরুদ না পড়লে নামাজই হয় না। তাঁদের যদি না চিনি বা না জানি তাহলে নামাজে দরুদ পড়লেও তা কোন উপকারে আসবে কি?????????? একটু চিন্তা করুন!!!!!!!!

কাঁদের উসিলায় হযরত আদম (আঃ)-এর দোয়া কবুল হয়েছিল!
আল্লাহ্ হযরত আদম (আঃ)-কে সৃষ্টির পর তাঁকে কিছু নাম শিক্ষা দিলেন। (সুরা-বাকারা ৩৭)
পরে সে নামের উসিলায় হযরত আদম (আঃ) আল্লাহর কাছে দোয়া প্রাথনা করেন। এবং আল্লাহ সেই নামের উসিলায় হযরত আদম (আঃ)-এর দোয়া কবুল করেন। আল্লাহ যে মান ব্যক্তিগণের উসিলায় হযরত আদমের দোয়া কবুল করেছিলেন তাঁরা হলেন। (পাকপাঞ্জাতন) হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) ইমাম আলী (আঃ). ফাতেমা জাহরা (আঃ), ইমাম হাসান (আঃ) ও ইমাম হোসাইন (আঃ)। সুত্র: তাফসীরে দূর্রে মানসুর ১ম খন্ড পৃ: ১৬১ জালালউদ্দিন সিউতি, ইয়নাবীউল মুয়াদ্দাত পৃ:৯৭ কেফায়াতুল মোওয়াহহেদীন-২য় খ. পৃ: ৩২ ।
বান্দার আমলকে শুধু আল্লাহ নয়, তাঁর রাসূল এবং আহলে বায়েত-এর ইমামগণও দেখে থাকবেন।

আল কোরআনের ঘোষণা, আর বলুন, তোমরা আমল কর, আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল এবং মুমিমগণ তোমাদের আমল দেখবেন। (সুরা তাওবা আয়াত ১০৫)

আহলে বায়েত (আঃ)গণই নাজাতের তরী বা ক্রাণকতা
নবী করিম (সাঃ)-এর প্রখ্যাত সাহাবী হযরত আবুজার আল গিফারি (রাঃ) থেকে বণনা, তিনি বলেন, আমি রাসূল (সাঃ)-কে বলতে শুনেছি, আমার আহলে বায়েত এর সদস্যগণ (আলী, ফাতেমা, হাসান ও হোসাইন)। আমার উম্মতের জন্য তেমনি নাজাতের তরী, যেমনি আল্লাহর নবী নুহ (আঃ)-এর তরী মহা প্রলয়ের সময় তার জাতির জন্য আশ্রয় ও নাজাতের তরী ছিল। অথাৎ যারাই হযরত নুহ (আঃ)-এর তরীতে উঠেছিল তারাই মহাপ্রলয় থেকে নাজাত পেয়েছিল (হযরত নূহের ছেলে তরীতে উঠেনি আল্লাহ তাকেও ছাড়েনি) তেমনি এই উম্মতের যার আমার আহলে বায়েতকে অনুসরণ করবে তারাই নাজাত পাবে এবং যারা অনুসরণ করবে না তারা সুস্পষ্ট পথভ্রষ্ট (জাহান্নামী) হবে।
সুত্রঃ নরুল আবসার পৃ:-১০৪; মুস্তাদরাক হাকেম ৩য় খন্ড প:১৫১; ইয়া নাবিউল মুয়াদ্দাত পৃ:৩০; সায়ায়েকে মোহরেকা পৃ:১৮৪,২৩৪ (মিশর); কেফায়াতুত তালেব পৃ:২৩৩; মাসিক মদিনা (সেপ্টেম্বর ২০০০) পৃ:৬; নবী পরিবারের প্রতি ভালবাসা পৃ:১৭ এছাড়া আরো অনেক কিতাবে।

আহলে বায়েত (আঃ)-এর অত্যাচারীদের উপর জান্নাত হারাম
নবী করিম (সাঃ) বলেছেন যে, “আল্লাহ ঐ ব্যক্তিদের উপর জান্নাত হারাম করে দিয়েছেন, যারা আমরা আহলে বায়েতের উপর অত্যাচার করে বা তাদের সাথে ঝগড়া বিবাদ করবে বা তাদের সাথে যুদ্ধ করবে। অথবা তাদেরকে লুন্ঠন করবে বা তাদের মন্দ বলবে। (সূত্র: ওবায়দুল্লাহ অমৃতসরীর আরজাহুল মাতালেব, পৃ:-৪১৮, ইবনে হাজার মাক্কীর মাওয়ায়েকে মোহরেকা পৃ-১০৫)।

সংগ্রহঃ আহলে বায়েত (আঃ) ই নাজাতের তরী বা ত্রাণকরতা

No comments

Powered by Blogger.