উষ্ঠের যুদ্ধ/ উম্মুল মোমেনিন আয়েশা এবং মাওলা আলীর সাথে যে যুদ্ধ সংগঠিত হয় তার বিবরণ। The Battle of Ustah / The Battle of Umul Momenin Ayesha and Maula Ali
খোৎবা – ১৩
বসরার জনগণকে তিরস্কার
তোমরা ছিলে একজন রমনীর সৈন্য
এবং একটা চতুষ্পদ জন্তুর নিয়ন্ত্রণাধীন। যখন জন্তুটি রোষে গর্জে উঠলো, তোমরাও উহার সঙ্গে সাড়া দিলে। আবার যখন জন্তুটির পায়ের শিরা কেটে দেয়া হয়েছিল, তোমরা তখন পালিয়ে গেলে। তোমাদের চরিত্র নিম্নমানের এবং তোমরা অঙ্গীকার ভঙ্গকারী। তোমাদের হৃদয় হচ্ছে মোনাফেকীপূর্ণ। তোমাদের পানি হচ্ছে লবনাক্ত। যারা তোমাদের
সঙ্গে থাকে তারা পাপে ডুবে থাকে এবং যারা তোমাদের পরিত্যাগ করে তারা আল্লাহ্র রহমতের অধিকারী হয়। যদিও আমি তোমাদের মসজিদকে নৌকার উপরিভাগের মত দীপ্যমান দেখছি
তবুও আল্লাহ্ উহার ওপর ও নীচের দিক হতে শাস্তি প্রেরণ করলে তোমারা যারা এতে রয়েছো প্রত্যেকেই
অতলে তলিয়ে যাবে
২। অন্য এক বর্ণনায় বলা হয়েছেঃ
২। অন্য এক বর্ণনায় বলা হয়েছেঃ
আল্লাহর কসম, তোমাদের শহর নিশ্চয়ই, এতোখানি ডুবে যাবে যে এর মসজিদকে
আমি নৌকার উপরিভাগ অথবা বসে থাকা উটপাখীর মতে দেখতে পাচ্ছি। অন্য এক বর্ণনায় বলা হয়েছেঃ
তোমাদের মসজিদকে গভীর সমুদ্রে
একটা পাখীর বক্ষের মত দেখতে পাচ্ছি।
অন্য এক বর্ণনানুযায়ীঃ
তোমাদের শহর অতীব পুতিগন্ধময়। শহরটি পানির অত্যন্ত নিকটবর্তী এবং আকাশ থেকে অনেক দুরে। এ শহরের দশ ভাগের নয় ভাগই পাপে পঙ্কিল। যে কেউ এতে প্রবেশ করে সে পাপের মধ্যে প্রবেশ করে এবং যে এ শহর থেকে বেরিয়ে যায়
সে আল্লাহ্র ক্ষমা লাভ করে। তোমাদের এ জনপদের
দিকে তাকালে দেখা যায় যে, পানি এমনভাবে এটাকে গ্রাস করেছে কেবলমাত্র মসজিদের চূড়া গভীর সমুদ্রে
ভাসমান পাখীর বক্ষের মত ছাড়া আর কিছুই দেখা যায় না।
১। বাহরানী ১০১ লিখেছেন যে, জামালের যুদ্ধ সমাপ্ত হবার পর তৃতীয় দিনে আমিরুল
মোমেনিন বসরার কেন্দ্রীয় মসজিদে ফজর সালাত সমাপ্ত করে সালাত স্থানের ডান দিকের দেয়ালে
দিকের দেয়ালে হেলান দিয়ে এ খোৎবা প্রদাব করেন। এতে তিনি বসরার জনগণের চরিত্রের নীচতা ও ধূর্ততা বর্ণনা করেন। তারা নিজেদের বিচার বিবেচনা বাদ দিয়ে অন্যের প্ররোচনায় দুমায়িত
হয়ে তাদের নিয়ন্ত্রণভার উটের পিঠে বসে থাকা একজন রমণীর হাতে তুলে দিয়েছিল। তারা তাদের বায়াত ভঙ্গ করেছিল এবং দ্বিমুখী কর্ম দ্বারা তাদের
চরিত্রের নীচতা ও বদস্বভাব প্রকাশ করেছিল। এ খোৎবায় ‘রমণী’ বলতে
আয়শাকে এবং চতুষ্পদ জন্তু বলতে আয়শার উটকে বুঝানো হয়েছে। সেজন্যই এ যুদ্ধের নামকরণ করা হয়েচে “জামালের (উটের) যুদ্ধ।
এ যুদ্ধের সুত্রপাত এভাবে
হয়েছিল যে, যদিও উসমানের জীবদ্দশায় আয়শা তার ঘোর বিরোধিতা করতেন
এবং তাকে অবরোধের মধ্যে ফেলেই মক্কায় চলে গিয়েছিলেন তবুও মক্কা হতে মদিনায় ফেরার পথে
তিনি আবদুল্লাহ্ ইবনে সালামার কাছে জানতে পারলেন যে,
উসমানের পর খলিফা হিসেবে সকলেই আলীর হাতে বায়াত গ্রহণ করেছে। একথা শুনামাত্রই আয়শা দুঃখ সহকারে বললেন, “আলীর বায়ত গ্রহণের পূর্বে পৃথিবীর
ওপর আকাশ ভেঙ্গে পড়া ভাল ছিল। আমি মক্কায়
ফিরে চলে যাব।” তিনি মক্কায়
ফিরে যাবার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলেন এবং বললেন, “আল্লাহর কসম,
উসমান অসহায়ভাবে নিহত হয়েছে। নিশ্চয়ই আমি তার রক্তের বদলা নেব।” আয়শার এতেন পরিবর্তন দেখে ইবনে সালামা তাজ্জ্বব হয়ে বলরেন,
“আপনি এসব কি বলছেন! আপনি নিজেই তো বললেন এ
‘নাছাল’ টিকে হত্যা করে ফেল; সে বেঈমান হয়ে গেছে।” প্রত্ত্যুত্তরে আয়শা বললেন, “শুধু আমি এক
নই, সকলেই এ কথা বলতো। সে সব কথা বাদ দাও। এখন আমি যা বলি মনোযোগ দিয়ে
শ্রবন কর। এটা অতীব দুঃখজনক যে উসমানকে
তাওবা করে শোধরানোর কোন সুযোগ না দিয়ে হত্যা করা হয়েছে।” এ কথা শোনা মাত্রই ইবনে সালামা আয়শাকে উদ্দেশ্য
করে নিম্নের পংক্তি ক’টি আবৃত্তি করতে লাগলেনঃ
আপনি এটা শুরু করেছিলেন, এখন হঠাৎ বদলে গিয়ে
গোলযোগের ঝড়-তুফান তুলছেন,
আমরা মেনে নিলাম তাকে হত্যা করা হয়েছে
সে হত্যা কিন্তু আপনার নির্দেশেই
হয়েছে
এবং পৃকৃত খুনী সে যে আদেশ
করেছে।
এতদসত্ত্বেও আমাদের ওপর আকাশ ভেঙ্গে পড়েনি
অথবা চন্দ্র-সূর্য্যেও গ্রহণ লোগেনি।
নিশ্চয়ই, মানুষ এমন একজনের বায়াত গ্রহণ করেছে
যিনি শক্তিমত্তা ও মহানুভবতা
দিয়ে শত্রুকে
প্রতিহত করতে পারবেন
যিনি কখনো কখনো ‘সোরা’গণেকে কাছে
ভিড়তে দেবেন না
যিনি কখনো রশির পাক খুলবেন না
শক্রগণও তাতে দামিত থাকবে।
তিনি সর্বদা যুদ্ধের জন্য অস্ত্রধারণ করে আছেন
ইমানদার কখনো বিশ্বাসঘাতকের মত নয়।
যা হোক, প্রতিশোধের একটা উন্মত্ততা নিয়ে আয়শা মক্কায় ফিরে গিয়ে উসমানের হত্যার বদলা
নেয়ার জন্য তার হত্যা সম্পর্কে নানা প্রকার কল্পকাহিনী ছড়িয়ে জনমত গঠন করতে লাগলো। তার ডাকে প্রথমেই সাড়া দিল উসমানের সময়কার মক্কার গভর্ণর আবদুল্লাহ্ ইবনে আমির আল-হাদরামী। সে সাথে মারওয়ান ইবনে হাকাম, সা’দ ইবনে
আ’স এবং উমাইয়া গোত্রের আরো অনেকে। ইতোসবরে তালহা ইবনে উবায়দুল্লাহ্ ও জুবায়র ইবনে আওয়াম মদিনা
হতে মক্কায় পৌছে গিয়েছিল। অপর দিকে উসমানের রাজত্বকালে
ইয়েমেনের গভর্ণর ইয়ালা ইবনে মুনাব্বিহ্ ও বসরার গভর্ণর আবদুল্লাহ্ ইবনে আমির ইবনে কুরায়েজ
মক্কায় পৌঁছে গিয়েছিল। তারা সকলে মিলিতভাবে পরিকল্পনা
তৈরী করতে লাগলো। তারা আমিরুল মোমেনিনের বিরুদ্ধে
যুদ্ধ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলো। কিন্তু যুদ্ধক্ষেত্র
নির্ধারণে আলোচনা অব্যাহত রাখলো। মদিনাকে যুদ্ধক্ষেত্র
হিসেবে নির্ধারণ করার জন্য আয়শা অভিমত ব্যক্ত করলেও কতিপয় লোক তাতে অমত প্রকাশ করেছিল। তারা বললো যে, মদিনাবাসীদের বাগে আনা বড়উ কঠিন ব্যাপার। কাজেই অন্য কোথাও যুদ্ধক্ষেত্র নির্ধারণ করার জন্য তারা বললো। অবশেষে অনেক শলা-পরাশর্শের পর বসরার দিকে মার্চ করার সিন্ধান্ত
তারা গ্রহণ করলো। কারণ যুদ্ধের কারণের প্রতি
সমর্থম দেযার মত লোকের অভাব বসরায় হবে না বলে তাদের বিশ্বাস ছিল। ফলে আবদুল্লাহ্ ইবনে আমির অগনিত সম্পদ আর ইয়ালা ইবনে মুনাব্বির
ছয় লক্ষ দিরহাম ও ছয় শত উট অনুদান দ্বারা তিন হাজার সৈন্যের একটা বাহিনী গঠন করে বসরা
অভিমুখে প্রেরণ করলো। পথিমধ্য একটা ছোট্ট ঘটনার
কারণে আয়শা অগ্রসর হতে চাইলেন না। ঘটনাটি হলো- একটা জায়গায় উপনীত হতে আয়শা কুকুরের
ঘেউ ঘেউ শুনতে পেলেন। তৎক্ষণাৎ তিনি
তার উট চালকের কাছে সে জায়গার নাম জানতে চাইলেন। চালক বললো যে, এ জায়গাটির নাম হাওয়াব। জায়গাটির নাম শুনামাত্রই আয়শা আঁতকে উঠরেন। কারণ তার মনে পড়ে গেল রাসুল (সঃ) ভবিষ্যবাণী। একদিন রাসূল (সঃ) তাঁর
স্ত্রীগণকে লক্ষ্য করে বলেছিলেন, “আমি জানি না, তোমাদের কাকে দেখে হাওয়াবের কুকুরগুলো ঘেউ ঘেউ করে উঠবে।” আয়শা বুঝতে পারলেন যে,
তিনিই সেই স্ত্রী; তখন তিনি অগ্রযাত্রা বন্ধ করার
ইচ্ছা প্রকাশ করলেন। কিন্তু জুবায়র শপথ করে তাকে বললো সে জায়গা হাওয়াব নয়। তালহা জুবায়রের কথা সমর্থন করলো। তারা উভয়ে আরো
পঞ্চাশজন লোক নিয়ে এলো যারা জুবায়রের কথার সত্যতার সাক্ষ্য দিল। ফলে আয়শা পুনরায় অগ্রযাত্র শুরু করলেন।
এ সৈন্যবাহিনী যখন বসরায় পৌছালো,
লোকেরা আয়শাকে বহনকারী প্রাণীটি দেখে বিস্ময়-বিহবল
হয়ে পড়লো। জারিয়া ইবনে কুদাসা বললো, ওগো, উম্মুল
মোমেনিন, উসমানের হত্যা একটা হৃদয় বিদায়ক ঘটনা কিন্তুর তার চেয়েও
হৃদয় বিদায়ক হলো আপনি এ অভিশপ্ত উটে চড়ে বেড়িয়ে এসেছেন এবং আপনার সম্মান ও মর্যাদা
ধ্বংস করেছেন। এখান থেকে ফিরে যাওয়াই আপনার
পক্ষে অধিকতর ভাল।” হাওয়াবের
ঘটনা, কুরআনের নিষেধাজ্ঞা (তোমরা স্বগৃহে
অবস্থান করবে- ৩৩:৩৩) কোন কিছুই যখন তাকে নিবৃত্ত করতে পারেনি তখন জারিয়ার কথা তার কর্ণ কুহরে প্রবেশ
করবে কেন?
আয়শার সৈন্যবাহিনী যখন বসরা
নগরীতে প্রবেশ করার চেষ্টা করলো তখন বসরার গভর্ণর উসমান ইবনে হুনায়ক বাধা প্রদান করলো। উভয় পক্ষই আসি কোষমুক্ত করে একে অপরের ওপর আঘাত হানতে শুরু করলো- উভয় পক্ষেই বেশ কিছু সংখ্যক লোক
হতাহত হলো। তৎপর আয়শা তারা প্রভাবের
সুযোগ গ্রহণ করে হস্তক্ষেপ করলেন। তারা উভয় পক্ষ
এ মর্মে সম্মত হলো যে, আমিরুল মোমেনিন বসরায় আসা অবধি উসমান ইবনে হুনায়ফ গভর্ণর থাকবে
এবং বর্তমান প্রশাসনের কাজ চালিয়ে যাবে। কিন্তু মাত্র দু’দিন পারেই এক গভীর রাতে আয়শার বাহিনী উসমান ইবনে হুনায়ফকে আক্রমণ
করে চল্লিশ জন নিরপরাধ লোককে হত্যা করেছিল এবং উসমান ইবনে হুনায়ফকে বন্দী করে বেদম
প্রহারে আহত করেছিল। এমনকি তার প্রতিটি
দাড়ি টেনে তুলে ফেলেছিল। অতঃপর তারা বায়তুল মালের
গুদাম আক্রমণ করলো। বায়তুল মাল লুটের সময় বিশজন
লোক হত্যা করেছিল এবং পঞ্চাশজনকে গ্রেফতার করে শিরোচ্ছেদ করেছিল। তৎপর তারা বসরার শস্যভান্ডার আক্রমণ করেছিল। এতে বসরার একজন বয়োঃবৃদ্ধ গণ্যমান্য ব্যক্তি হুকায়ম ইবনে জাবালা
তার লোকজনসহ জুবায়কেরর কাছে এসে বললো, “নগরবাসীদের জন্য কিছু খাদ্যশস্য রেখে দিন। অত্যাচারেরও তো একটা সীমা আছে। সীমালঙ্ঘনকারীকে আল্লাহ্ পছন্দ করেন না। আল্লাহ্র দোহাই, এ ধ্বংসযজ্ঞ বন্ধ করুন এবং উসমান ইবনে হুনায়ফকে ছেড়ে দিন। আপনার হৃদয়ে কি আল্লাহ্র ভয় নেই?” জুবায়র বললো,
“এটা উসমান হত্যার পতিশোধ।” ইবনে জাবালা প্রত্যুত্তরে বললো, “আপনারা এখানে যাদের হত্যা করেছেন তাদের কেউ কি উসমানের হত্যার সাথে জড়িত ছিল?
আল্লাহ্র কসম, যদি আমার
সমর্থক ও অনুচর থাকতো তবে যেসব মুসলিম বিনা অপরাধে আপনারা হত্যা করেছেন তাদের রক্তের
বদলা নিতাম।” জুবায়র বললো,
“আমরা এক কণা শস্যও ফেরত দেব না এবং উসমান ইবনে হুনায়ফকেও ছাড়বো না।” অবশেষে দু’পক্ষের যুদ্ধ বেঁধে গেল। কিন্তু এত বড়
বাহিনীর সম্মুখে মুষ্টিমেয় ক’জন লোক কতক্ষণ টিকতে পারে? ফলে হুকাযম ইবনে
জাবালা, তার পুত্র আশরাফ ইবনে হুকায়ম ও ভ্রাতা রিল ইবনে জাবালাসহ
এ গোত্রের সত্তরজন নিহত হয়েছিল। মোটকথা, আয়শার বাহিনী হত্যা আর লুটপাত
করে বসরায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল। তথায় না ছিল কারো জীবনের নিরাপত্তা, না ছিল কারো ইজ্জত আর সম্পদ রক্ষার উপায়।
আমিরুল মোমেনিন এ সব অত্যাচারের
সংবাদ পেয়ে সত্তরজন বদরী (বদর যুদ্ধে যার অংশগ্রহণ করেছিল)
ও চারশত রিদওয়ানী (যারা রিদওয়ানে বায়াতের সময় উপস্থিত
ছিল) সমন্বয়ে একটা বাহিনী গঠন করে বসরা অভিমুখে যাত্রা করলেন। যখন তিনি যিকর নামক স্থানে পৌছলেন তাখন তাঁর পুত্র হাসান ও আম্মার
ইবনে ইয়াসিরকে কুফায় পাঠালেন যেন কুফাবাসীগণ তাঁর সহায়তায় এগিয়ে আসে। আবু মুসা আশারীর বিরোধিতা সত্ত্বেও এ আমন্ত্রণে সাত হাজার কুফী
যোদ্ধা আমিরুল মোমেনিনের বাহিনীতে যেগা দিয়েছিল। সৈন্যগণকে বিভিন্ন কমান্ডারের অধীনে ভাগ করে দিয়ে তিনি সে স্থান ত্যাগ করলেন। চাক্ষুষদর্শী সাক্ষীদের বর্ণনা হতে জানা যায় যে, আমিরুল মোমেনিনের সৈন্যবাহিনী বসরার নিকটবর্তী
হলে সর্বপ্রথমেই আনসারদের একটি দল নজরে পড়েছিল। আবু আইয়ুব আনসারী ছিলেন এ দলের পতাকা বাহক। এরপর এক হাজার সৈন্যের আরেকটি বাহিনী পজরে পড়েছিল যাদের কমান্ডার ছিলেন খুজায়মা
ইবনে ছাবিত আনসারী। তৎপর আরেকটি বাহিনী দৃষ্টিগোচর
হয়েছিল তাদের পতাকা বহন করছিলেন আবু কাতাদাহ্ ইবনে রাবি। তৎপর এক হাজার বৃদ্ধ ও যুবকের একটি বাহিনী নজরে পড়েছিল যাদের প্রত্যেকের কপালে
সেজদার চিহ্ন এবং মুখমন্ডলে আল্লাহ্র ভয়ের ছাপ ছিল। তাদের দেখে মনে হয়েছিল যেত তারা শেষ বিচারের দিনে আল্লাহ্ম মহত্বের সামনে দন্ডায়মান। তাদের কমান্ডার সাদা পোষাক ও মাথায় কালো পাগড়ী পরে একটা কালো
ঘোড়ার চড়ে উচ্চস্বরে কুরআন তেলওয়াত করতেছিলেন। ইনিই হলেন আম্মার ইবনে ইয়াসিব। তৎপর আরোটি
বাহিনী নজরে এলো। এদের পতাকা কায়েস ইবনে সাদ
উবনে উবাদার হাতে ছিল। অতঃপর এক বাহিনীর নজরে এলো। এদের কমান্ডার সাদা পোষাক ও মাথায় কালো পাগড়ী পরিহিত ছিল। তিনি এত সুদর্শন চিলেন যে সকলের দৃষ্টি তাঁর প্রতি নিপাতিত হয়েছিল। ইনি হরেন আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস। তারপর রাসুলের সাহাবাগণের বাহিনী এগিয়ে এলো। এঁদের পতাকা কুছাম ইবনে আব্বাসের হাতে ছিল। এভাবে কয়েকটি বাহিনী অতিক্রম
করার পর একটা বিশাল বাহিনী দেখা গেল। তাদের অধিকাংশের
হাতে ছিল বর্শা। তাদের সঙ্গে ছিল বিভিন্ন
রঙের অনেক পতাকা। তন্মোধ্য একটা বিরাট পতাকা
বিশেষ বৈশিষ্ট্য সহকারে দেখা গেল। এ পতাকার পেছনে একজন ঘোড়-সওয়ারকে দেখা গেল যার মধ্যে মহত্বের ও শ্রেষ্ঠত্বের
ছাপ রয়েছে। তাঁর পেশী ছিল সুউন্নত এবং দৃষ্টি ছিল নীচের দিকে। তাঁর সম্ভ্রম ও মর্যাদা এত প্রখর ছিল যে, কেউ তাঁর দিকে তাকাতে পারছিল না। ইনিই হলেন চির বিজয়ী বীর
শেরে খোদা আলী ইবনে আবি তালিব। তাঁর ডানে হাসান, বামে হুসাইন, সম্মুখে মুহাম্মদ ইবনে হানাফিয়া এবং পেছনে বদরীগণ, হাশেমী
বংশের যুবকগণ ও আবদুল্লাহ্ ইবনে জাফর ইবনে আবি তালিব। মুহাম্মদ ইবনে হানাফিয়া বিজয়
ও মর্যাদার পতাকা হতে ধীর পদক্ষেপে এগিয়ে যাচ্ছিলেন। এ বাহিনী যাওয়াইয়াহ্ নামক
স্থানে পৌছলে আমিরুল মোমেনিন ঘোড়া হতে অবতরণ করে চার রাকাত সালাত আদায় করলেন এবং দীর্ঘক্ষণ
সেজদায় পড়ে রইলেন। যখন তিনি মাথা তুললেন তখন দেখা গেল তাঁর অশ্রুতে মাটি ভিজে গিয়েছিল এবং মুখে বলতেছিলেনঃ
হে আকাশ, পৃথিবী ও মহাশূণ্যের ধারক, এটা বসরা। এর কল্যাণ দ্বারা আমাদের
বুক ভরে দাও এবং
মন্দ হতে আমাদের রক্ষা কর।
অতপর তিনি সম্মুখে অগ্রসর
হয়ে জামালের যুদ্ধক্ষেত্রের যে স্থানে শত্রুপক্ষ পূর্ব হতেই ক্যাম্প করেছিল সেখানে
নেমে পড়লেন। সর্বপ্রথমেআমিরুল মোমেনিন
নিজের সৈন্যবাহিনীকে নির্দেশ দিলেন, “কেউ অন্যকে আক্রমণ করবে না বা আক্রমণের ইন্ধনও
যোগাবে না।” তৎপর তিনি
সোজাসুজি শত্রু সৈন্যের সম্মুখে এগিয়ে গিয়ে তালহা ও জুবায়রকে ডেকে বললেন, “তোমরা আল্লাহ্ ও তাঁর রাসুলের নামে শপথ করে আয়শাকে বল আমি কি উসমানের হত্যার
দোষ থেকে মুক্ত নই? উসমান সম্পর্কে তোমরা যা বলতে আমি কি তা বলিনি?
বায়াতের জন্য আমি কি তোমাদের ওপর কোন চাপ দিয়েছিলাম নাকি তোমরা স্বেচ্ছায়
আমার বায়াত গ্রহণ করেছিলে?”আমিরুল মোমেনিনের এসব কথা শুনে তালহা
ক্ষুদ্ধ হয়ে গেল এবং জুবায়র কিছুটা কোমল হয়েছিল। অতঃপর আমিরুল মোমেনিন ফিরে এসে মুসলিম নামক আবদ কায়েস গোত্রের একজন যুবকের হাতে
কুরআন দিয়ে পাঠালেন এবং যেন তিনি শত্রুপক্ষকে কুরআনের নির্দেশ শুনিয়ে দেন। কিন্তু শত্রুপক্ষ এ পূত-পবিত্র লোকটিকে তীর দ্বারা ঢেকে ফেললো। তৎপর আম্মার ইবনে ইয়াসির এগিয়ে এসে যুদ্ধের ভয়াবহতা সম্পর্কে
তাদের বুঝিয়ে বলতে লাগলেন কিন্তু তাকেও তীর দ্বারা জবাব দেয়া হলো। এ পর্যন্ত আমিরুল মোমেনিন কোন আক্রমণের অনুমতি দেননি। তাই শত্রুপক্ষ তীর-বৃষ্টি ঝরাতে উৎসাহ বোধ করছিলো। শেষ পর্যন্ত কয়েকজন সাহসী যোদ্ধার মুমূর্ষু অবস্থাআমিরুল মোমেনিনের
বাহিনীতে আতঙ্কের সৃষ্টি করলো এবং তারা তাকে বললো, “হে, মাওলাল মোমেনিন,
আপনি আমাদের আক্রমণ করতে দিচ্ছেন না অথচ তারা আমাদেরকে তীর দ্বারা ঢেকে
ফেলছে। আর কতক্ষণ আমরা আমাদের বক্ষকে
তাদের তীরের লক্ষ্যস্থল হিসেবে রাখবো এবং তাদের হঠকারিতার হাত গুটিয়ে থাকবো।” এসব কথায় আমিরুল মোমেনিন রাগান্বিত
হলেও সংযম আর ধৈর্য্য ধারণ করে কোন প্রকার যুদ্ধের পোষাক না পরে খালি হাতে শত্রুর সম্মুখে
উপস্থিত হয়ে চিৎকার করে বললেন, “জুবায়র কোথায়?” প্রথমতঃ জুবায়র এগিয়ে আসতে ইতস্ততঃ করতেছিল কিন্তু যখন দেখলো যে,আমিরুল মোমেনিনের হাতে কোন অস্ত্র নেই তখন সে বেরিয়ে এসেছিল। আমিরুল মোমেনিন বললেন, “ওহে জুবায়র তোমরা কি মনে পড়ে একদিন রাসুলে
খোদা তোমাকে বলেছিলেন যে, তুমি আমার সাথে যুদ্ধ করবে এবং তাকে
অন্যায় ও বাড়াবাড়ি তোমার দিক থেকেই
হবে।” প্রত্যুত্তরে জুবায়র বললো তিনি এরূপই বলেছিলেন। তখন আমিরুল মোমেনিন জিজ্ঞেস করলেন, “তাহলে কেন আমার সাথে যুদ্ধ করতে
এসেছো?” উত্তরে জুবায়র বললো যে, তার স্মৃতিতে
রাসুলের কথা হারিয়ে গিয়েছিল; আগে স্মরণ থাকলে সে বসরায় আসতো না। আমিরুল মোমেনিন বললেন, “ভালো কথা, এখন তো তুমি
স্মরণ করতে পেরেছো?” জুবায়র হাঁ বলেই আয়শার কাছে গিয়ে বললো,
“আমি ফিরে যাচ্ছি, কারণ আলী আমাকে রাসুলের একটি
কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছে। আমি ধ্বংস হয়ে
গিয়েছিলাম। এখন সঠিক পথ পেয়েছি। আমি আলীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবো না।” আয়শা বললেন, “তোমাকে আবদুল
মুত্তালিবের পুত্রগণের তরবারির ভয়ে ধরেছে।” জুবায়র ‘না’ বলেই তার ঘোড়া ফিরিয়ে যুদ্ধের জন্য রুখে দাঁড়ালো।
এদিকে আমিরুল মোমেনিন জুবায়রের
সাথে কথোপকথন শেষে ফিরে এসেই দেখলেন শত্রুপক্ষ তাঁর বাহিনীর যান ও বাম বাহু আক্রমণ
করে ফেলেছে। এ অবস্থা লক্ষ্য করে তিনি
বললেন, “সকল ওজর শেষ হয়ে গেল। আমার পুত্র মুহাম্মদকে যাক।” মুহাম্মদ এলে তিনি বললেন, “পুত্র আমার এখন শত্রুকে আক্রমণ কর।” মুহাম্মদ মস্তক অবনত করলেন এবং পতাকা হতে নিয়ে
যুদ্ধক্ষেত্রের দিকে এগিয়ে গেলেন। কিন্তু এত বিপুল
পরিমাণ তীর নিক্ষিপ্ত হচ্ছিলো যে, তাকে
থেকে যেতে হলো। এ অবস্থা দেখে আমিরুল মোমেনিন
চিৎকার দিয়ে বললেন, “মুহাম্মদ, এগিয়ে যাচ্ছো না কেন?
“তিনি বললেন, “পিতা, এহেন
তীর-বৃষ্টিতে এগিয়ে যাবার উপায় নেই। তীর-বৃষ্টি একটি থেমে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন।” আমিরুল মোমেনিন বললেন,
“না, তীর আর বর্শা ঠেলেই প্রবল বেগে এগিয়ে যাও
এবং শত্রুকে আক্রমণ কর।” এতে মুহাম্মদ ইবনে হানাফিয়া একটুখানি অগ্রসর হলেন কিন্তু তীরন্দাজগণ
এমনভবে তাকে ঘিরে ফেললো, তার পদচারণা বন্ধ করতে হলো। এ অবস্থা লক্ষ্য করে আমিরুল মোমেনিনের কপালে কুঞ্চন দেখা দিল
এবং তিনি সজোরে এগিয়ে গিয়ে মুহাম্মদের তরবারির বাঁটে আঘাত করে বললেন, “তোমার এ ভীরুতা তোমার মায়ের রক্তের
ফল।” একথা বলেই
মুহাম্মদের হাত থেকে পতাকা নিজের হাতে নিলেন এবং আস্তিন গুটিয়ে এভাবে আক্রমণ করলেন
যে, শত্রুব্যুহের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত পর্যন্ত কোলাহল শুরু
হয়ে গেল। সে সারির দিকে তিনি যেতে
তা পরিস্কার হয়ে যেত এবং যে দিকেই যেতনে দেহের পর দেহ পড়ে যেত এবং মাথাগুলো ঘোড়ার
খুরের আঘাতে গড়াগড়ি দিত। শত্রুর সারিতে প্রবল প্রকম্পিত করে স্বস্থানে ফিরে এসে মুহাম্মাকে
বললেন, “দেখ
পুত্র, যুদ্ধ এভাবে করতে হয়।” এ বলে তিনি তার হাতে পতাকা দিয়ে এগিয়ে যেতে বললেন। মুহাম্মদ একটি আনসার বাহিনী নিয়ে শত্রুর দিকে এগিয়ে গেলেন। শত্রুপক্ষও বর্শা তাক করে তার দিকে এগিয়ে এলো। কিন্তু শ্যের্য্যবান পিতার সাহসী পুত্র সারির পর সারি ছত্রভঙ্গ
করে দিল এবং যুদ্ধক্ষেত্রে মৃতদেহ স্তুপাকার হয়ে পড়লো।
অপরদিকে শত্রুপক্ষও তাদের সৈন্যগণকে ত্যাগের মহিমা
শোনাচ্ছিল। একটির ওপর আরেকটি মৃতদেহ
গড়িয়ে পড়ছিলো তবুও উটটিকে ঘিরে তারা জীবন বিসর্জন দিয়ে যাচ্ছিলো। বিশেষ করে দাব্বার লোকদের অবস্থা এমন ছিল যে, উটটির লাগাম ধরে রাখার কারণে কনুই
পর্যন্ত তাদের হাত কেটে ফেলা হয়েছিল তাদের বক্ষ বিদীর্ণ করা হয়েছিল তবুও তাদের মুখে
নিম্নের যুদ্ধের গান শোনা যাচ্ছিলঃ
মৃত্যু আমাদের কাছে মধুর চেয়ে মিষ্টি,
আমরা বনু দাব্বাহ- উটের রাখাল,
আমরা মৃত্যুর পুত্র যখন মৃত্যু আসে,
আমরা বর্শার ফলায় উসমানের মৃত্যু ঘোষনা করি,
আমাদের নেতাকে ফিরিয়ে দাও, তবেই এ যুদ্ধ শেষ হবে।
বনি দাব্বার লোকদের অজ্ঞতা
ও হীন চরিত্র সম্বন্ধে একটা ঘটনা থেকেই অনুমান করা যায় যা আবুল হাসান আলী ইবনে মুহাম্মদ
মাদায়নী বর্ণনা করেছেন। তিনি লিখেছেন
বসরায় একজন কানকাটা লোকের সঙ্গে তার দেখা হয়েছিল। তিনি তাকে এর কারণ জিজ্ঞেস করলে সে বললো, “জামালের যুদ্ধে আমি মৃতদেহের দৃশ্য দেখছিলাম
হঠাৎ এক মুহূর্ষু ব্যক্তিকে দেখলাম তার মাথা মাটিতে আচ্ড়াচ্ছে। আমি তার কাছে গিয়ে শুনলাম সে নিম্নের পদ ক’টি বলছেঃ
আমাদের মাতা আমাদের মৃত্যুর
গভীর জলে ঠেলে দিল
আমরা পুরোপুরি ডুবেছি,
তিনি ফিরে এলেন না
ভাগ্যের হেরফেরে আমরা বনু
তায়ামকে মেনেছি
আসলে তারা ক্রীতদাস আর ক্রীতদাসী
ছাড়া কিছুই নয়।
আমি তাকে বললাম এটা কবিতা
বলার সময় নায়; বরং তুমি আল্লাহ্কে স্মরণ কর ও কালিমা শাহাদাত পড়। সে ক্রোধান্বিত দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে আমাকে গালিগালাজ শুরু
করে দিল। সে বললো কালিমা শাহাদাত পড়ে জীবনের শেষ মূহুর্তে তুমি আমাকে ভীত আর অধৈর্য্য হতে বলছো। আমি তার কথার স্তম্তিত হয়ে ফিরে চললাম। সে আমাকে ডাক দিয়ে বললো দোহাই তোমার আমাকে কালিমা শিখিয়ে দাও। আমি তাকে কালিমা শেখানোর জন্য কাছে গেলাম। সে তার কানের কাছে মুখ নিয়ে কালিমা বলতে অনুরোধ করলো। আমি মাথা নামাতেই সে আমার কান কামড়ে ধরলো এবং দাঁত দিয়ে আমূল
কেটে ফেললো। একজন মুমূর্ষ লোক থেকে প্রতিশোধ
নেয় আমি সমীচীন মনে করালাম না। তাই তাকে অভিশাপ
দিয়ে চলে যেতে উঠে দাঁড়ালাম; সে বললো, যদি তোমার মা জিজ্ঞেস করে কে তোমার কান কেটেছে তবে বলো উমায়ব ইবনে আহলাব দাব্বি
যে একজন মহিলা কর্তৃক প্রতারিত হয়েছে এবং সে মহিলা তাকে ইমানদারগণের কমান্ডার বানানোর
আশা দিয়েছিল।”
যা হোক এ রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের
যখন হাজার হাজার প্রাণ বিনষ্ট হলো এবং বনি আযদ ও বনি দাব্বার শত শত লোক উটটির লাগাম
ধরে রাখার কারণে নিহত হলো তখন আমিরুল মোমেনিন আদেশ করলেন, “উটটিকে
হত্যা কর। কারণ এটা শয়তান।” একথা বলেই তিনি এমন ভীমবেগে আক্রমণ
রচনা কররেন যে, “শান্তি! শান্তি!!”
“বাঁচাও! বাঁচাও!!” বলে চারদিকে
থেকে চিৎকার উঠেছিল। উটটির নিকটবর্তী
হয়ে উহাকেক হত্যা করার জন্য তিনি মুজয়র ইবনে দুলজাকে নির্দেশ দিলেন। বুজায়র তৎক্ষণাৎ এমন সজোরে আঘাত করলো যে উটটির বুক মাটিতে লেগে
গেল। উটটি পড়ে যাওয়া মাত্রই শত্রুপক্ষ আয়শাকে একাকী
ও নিরাপত্তাহীন অবস্থায় ফেলে পলায়ন করলো। সঙ্গে সঙ্গে
আমিরুল মোমেনিনের অনুচরগণ আয়শাকে বহনকারী হাওদা নিয়ন্ত্রণে নিয়ে গেল। আমিরুল মোমেনিনের নির্দেশে মুহাম্মদ ইবনে আবু বকর (আয়শার ভ্রাতা) আয়শাকে মাফিয়া
বিনতে হারিসের ঘরে নিয়ে গেল।
৩৬ হিজরী সনের ১০ই জমাদি-উস-সানী দ্বিপ্রহরে জামালের যুদ্ধ শুরু হয়েছিল এবং একই
দিন সন্ধ্যায় সমাপ্ত হয়েছিল। এ যুদ্ধে আমিরুল
মোমেনিনের বাইশ হাজার সৈন্যের মধ্যে এক হাজার
সত্তর জন (মতান্তরে পাঁচ শতজন) শহীদ হয়েছিল এবং আয়শার ত্রিশ হাজার
সৈন্যর মধ্যে সতের হাজার নিহত হয়েছিল। (কুতায়বাহ্ ৪৭,
তাবারী ৭৫, মাসুদী ১০৯, রাব্বিহ
১১৮)।
২। হাদীদ ১৫২ লিখেছেন, আমিরুল মোমেনিনের ভবিষদ্বাণী অনুযায়ী বসরায়
দু’বার বন্যা হয়েছিল- একবার কাদির বিল্লাহ্র রাজত্বকালে আরেকবার আল-কাইম বি আমরিল্লাহ্র রাজত্বকালে। উভয় বন্যায়
নগরী এমনভাবে পানিতে ডুবে গিয়েছিল যে, শুধুমাত্র মসজিদের মিনার ভাসমান পাখীর মতো দেকা
গিয়েছিল।
নাহ্জ আল-বালাগা
মূলঃ আমিরুল মোমেনিন
আলী ইবনে আবি তালিব
সংঙ্কলনঃ আশ-শরীফ আর-রাজী
ইংরেজি অনুবাদঃ
সৈয়দ আলী রেজা
বাংলা অনুবাদঃ
জেহাদুল ইসলাম
পৃষ্ঠা নং ৩১-৩৬
পৃষ্ঠা নং ৩১-৩৬
No comments