নামাজ এর ইহকালের উপকারিতা
নামাজ মানসিক রোগের প্রতিষেধক হিসেবে কাজ
পাকিস্তান মেডিকেল সমিতির এক সভায়, আমেরিকা মানসিক রোগের চিকিৎসাবিদ
অধ্যাপক হার্বাট আরবান বলেন, ভারতীয় উপমহাদেশের সর্বত্রই মানসিক রুগীর সংখ্যা বৃদ্ধি
পাচ্ছে। সম্প্রতি জাতিসংঘের রিপোর্টে এ কথা স্বকিার করা হয়েছে। তিনি অভিমত প্রকাশ করেছেন
বর্তমানের যুগের সমাজ ব্যবস্থার সৃজিত অর্থনৈতিক
অনিশ্চয়তা, অশান্তি, দুর্ভাবনা ও আশা নিরাশার প্রতিঘাত ও নিরাপত্তার অভাবই এর কারণ।

ডাঃ ফার্ল জাংগ রচিত “আত্মার সন্ধানে বর্তমানে মানব” নামক ইংরেজী
পুস্তকের ২৬৪ পৃষ্ঠায় লিখেছেন, আমি অসংখ্য মানসিক রোগীর চিকিৎসা করেছি; কিন্তু যারা
ধর্ম ভাবাপন্ন হতে পারে নাই তাদের কেউই সম্পূর্ণ আরোগ্য লাভ করতে পারে নাই। তিনি আরো
বলছেন যে, ভাবই মানুষকে জীবনী শক্তি দিয়ে বাচিয়ে রেখেছে।
দুশ্চিন্তা, দুর্ভবনা ও ভায়ের উপর নামাজের প্রভাব
মনে দুর্ভাবনা, দুঃশ্চিন্তাও ভয় উদয় হলে মানুষ স্বভাবতই নিজেকে নিঃসঙ্গ ও নিঃসহায় মনে করে এবং এই ভাব এদের তীব্রতাকে
আরো বাড়িয়ে দেয়, কিন্তু মানুষ যখন আল্লাহরে ধ্যানে নামাজে দাঁড়ায়, তখন সে মনে করে আমি
নিঃসঙ্গ নই। আমার সঙ্গে আল্লাহপাক আছেন। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ পাক কুরআন পাকে এরশাদ করেছেন-
নিশ্চয় আল্লাহ নির্ভরশীল লোকদেরকে ভালবাসেন।
যে ব্যক্তি আল্লাহর উপর নির্ভর করে, আল্লাহই তার জন্য যথেষ্ট।
আর এ জন্যই নামাজে সাহস বৃদ্ধি পায়। নামাজী লোক বিপদ-আপদে ধৈর্য্য ধারণ করতে সক্ষম
হয় ও আত্মহত্যা করে না। নামাজের সময় উর্ধ্বে হাত উঠাতে হয়। তাতে ফুসফুস প্রশস্ত হয়।
রুকুতে পাকস্থলীকে সবল করে, হজমে সাহয্য করে।
সেজদায় সময় ঘাড়, মুখমণ্ডল ও মস্তিষ্কে রক্ত প্রবাহিত হয়, নামাজে একাগ্রতা হাসিল হয়। নামাজ শালনিতা, নম্রতা
ও দ্বীনতা শিক্ষা দেয়, মনের অহংকারকে চাপিয়ে রাখে। বর্তমানে যুগের মানসিক রোগের চিকিৎসগণ
আবিষ্কার করেছেন যে, মানুষের মতে এমন কতকগুলো
দুঃখ-কষ্ট ও ক্ষোভ থাকে যা অন্যের নিকট প্রকাশ করলে তা লাঘব হয় না। বিশেষ করে মেয়ে
লোকেরা অন্যের নিকট যে পর্যন্ত দুঃখ কষ্ট মনের ভিতর থেকে বের করতে না পারে। সে পর্যন্ত
তার ক্ষান্ত হয় না। পরিশেষে মনের সব দুঃখ-কষ্ট বর্ণনা করতে পারলেই তাদের দুঃখ কষ্ট লাঘব হয়েছে মনে করে। বস্তুুত লাঘবও হয়ে
যায়। কিন্তু এমন কিছু লোক আছে, যারা অন্যের নিকট ঐ অপকর্মের কথা প্রকাশ করতে পারে না
ঐসব কপকর্মের গ্লানি ও অনুশোচনা অজ্ঞাতসারে মনে নানা প্রকার চাপা ক্ষোভ, হতাশা ইত্যাদি
সৃষ্টি করত; দুরারোগ্য ব্যধির সৃষ্টি করতে পারে। কিন্তু নামাজের সময় যত বড় অপকর্মই হোক না কেন অকপটে ঐসব অপরাধ আল্লাহর
নিকট স্বীকার করে ক্ষমা চাওয়া যায়। তাতে মনে আশার সঞ্চার হয় এবঙ মনে প্রশান্তির ভাব
উদয় হয়। ফলে সফলতা বোধ জন্মে।
এ প্রসঙ্গে হাদীস শরীফে বর্ণিত আছে, নামাজের উদ্যম বৃদ্ধি হয়,
কাজ সহজ সাধ্য হয়, স্বাস্থ্য অটুট থাকে, জীবনী শক্তি অযথা ক্ষুণ্ণ হয় না, নামাজী লোক
সংক্রামক ব্যাধি হতে অব্যাহতি পায় ও তাদের
সন্তান সন্তুতি বলিষ্ঠ হয়। নামাজ শরীরের ভারসাম্যতা রক্ষা করে। সে জন্য নামাজী লোককে
শীগ্রই বার্ধক্যে আক্রমণ করতে পারে না, রুকু ও সেজদা এই সব ভারসাম্যতা রক্ষা করে। নামাজে
অধিকাংশ বালামুছিবত দূর হয়। নামাজ আত্মাকে
নির্মর, শান্তিপূর্ণ ও শক্তিশালী করে আল্লাহর নিকটবর্তী করতে থাকে।
নোবেল প্রাই প্রাপ্ত ডাঃ ক্যারাল বলেছেন, আল্লাহর উপসনায় মনে
যেরূপ শক্তি ও উদ্যমের সৃষ্টি হয়, অন্য কিছুতেই তা হয় না। তিনি বলেছেন, ডাক্তার হিসেবে আমি লক্ষ্য করেছি যে, রোগ ওষুধে আরোগ্য হয় না।
তা আল্লাহর নিকট প্রর্থনায় অনায়াসে দূর হয়ে যায়। তিনি আরো বলেছেন, আল্লাহর নিকট
প্রার্থনা বিফলে গেছে, এমন কোন ঘটনা আমার জানা নাই। বাইবেল বর্ণিত আছে, আল্লাহর নিক
অসাধ্যকে সাধন করতে পারে।
এ প্রসঙ্গে আরো একটি কথা বলা যেতে পারে। দুইজন রোগী একই সমস্যা
নিয়ে ডাক্তার সাহেবের নিকট আসল। ডাক্তার সাহেব একই ধরনের ঔষুধ দ্বারা চিকিৎসা করার
পরে দেখা গেল, রোগীর মধ্যে একজন সুস্থ্য হয়েছে, অন্যজন মারা গছে। আসল কথা হলো রোগ ভালো
করার মালিক একমাত্র আল্লাহ।
পরকালের নাজাত এর জন্যই শুধু নামাজ পড়া হয় না। বরং নামাজ দ্বারা
আত্মতৃপ্তি ও আত্মশুদ্ধি অর্জিত হয়। নামাজের সৃজনী শক্তি মানব শরীরের গঠনমূরক কার্যে
ও আত্মার উন্নতি সাধনের জন্য কত বেশী এর আবশ্যকতা রয়েছে; তা এই ক্ষুদ্র গ্রস্থে বর্ণনা
করা সম্ভব নহে।
সংগ্রহঃ বিশ্বনবী'র (সাঃ) চিকিৎসা বিধান, ডাঃ আলমগীর মতি
সংগ্রহঃ বিশ্বনবী'র (সাঃ) চিকিৎসা বিধান, ডাঃ আলমগীর মতি
নামাজের শারীরিক উপকারিতা নিয়ে আপনার লেখাটি আসলেই অনেক চমৎকার হয়েছে। আমি অনেক কিছুই জানতে পেরেছি আপনার লেখা থেকে যা পূর্বে জানতাম না। আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ সুন্দর একটি লেখা আমাদের উপহার দেয়ার জন্য। এর প্রতিদান নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ তায়ালা আপনাকে দেবেন। আমিন।
ReplyDeleteধন্যবাদ ভাই,দোয়া করবেন
Delete