যুদ্ধের ময়দানে মাওলা আলী তার শত্রুদের প্রতি মহান মহানুভবনা।On the battlefield, Mawla Ali had great sympathy for his enemies.
সিফফিনে যখন মুয়াবিয়ার লোকেরা আমিরুল মোমেনিনের লোকদের পরাভূত করে ইউফ্রেটিস নদীর তীর দখল করে নেয় এবং তাদের পানি বন্ধ করে দেয় তখন আমিরুল মোমেনিন বলেনঃ
তারা তোমাদের সাথে যুদ্ধ করতে চায়। সুতরাং হয় তোমরা কলঙ্ককর ও হীন অবস্থা থাকো না হয় তোমাদের তরবারিকে রক্ত পান করাও এবং পানি দ্বারা তোমাদের তৃষ্ণা নিবারণ কর। প্রকৃত মৃত্যু পরাভূব জীবনে এবং প্রকৃত জীবন অন্যকে পরাভূত করায় বা বিজয় লাভ করায়। সাবধান, মুয়াবিয়া বিদ্রোহীদের একটি ছোট দলের নেতৃত্ব দিচ্ছে এবং সত্য ঘটনা হতে কৌশলে তাদের অন্ধকারে রাখা হয়েছে। ফলে তারা তাদের বক্ষকে মৃত্যুর লক্ষ্যস্থেলে পরিণত করেছে।
১। আমিরুল মোমেনিন সিফফিনে পৌঁছার আগেই মুয়াবিয়া নদীর তীরে চল্লিশ হাজার লোক মোতায়েন করলো যেন সিরিয়গণ ছাড়া আর কেউ পানি নিতে না পারে। আমিরুল মোমেনিনের বাহিনী যখন সেখানে পৌঁছালো তখন তারা দেখতে গেল অবরুদ্ধ স্থানটি ছাড়া পানি পাওয়ার আর কোন পথ নেই। অন্য একটি স্থান তারা বের করেছিল কিন্তু অনেক উঁচু টিলা অতিক্রম করে সেখানে যাওয়া বড়ই কষ্টসাধ্য ব্যাপার। আমিরুল মোমেনিন সা‘সা‘আহ্ ইবনে সুহান আল-আবদিকে মুয়াবিয়র নিকট প্রেরণ করে অনুরোধ জানালেন যে, সে যেন পানির ওপর হতে এহেন নিয়ন্ত্রণ তুলে নেয়। কিন্তু মায়াবিয় আমিরুল মোমেনিনের অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করলো। এতে আমিরুল মোমেনিনের বাহিনী তৃষ্ণা কাতর হয়ে পড়লো। আমিরুল মোমেনিন এ অবস্থা দেখে বললেন, “উঠ এবং তারবারির সাহায্যে পানি সংগ্রহ কর।” ফলে এসব তৃষ্ণার্ত লোক অসি কোষমুক্ত করলো- ধনুকে শর যোজনা করলো এবং মুয়াবিয়ার লোকদেরকে ছত্রভঙ্গ করে সোজা নদীতে চলে গেল এবং শত্রুকে বিতাড়িত করে পানি সংগ্রহের স্থান দখল করে নিল।
এসময় আমিরুল মোমেনিনের লোকেরা ইচ্ছা প্রকাশ করলো যে, তারাও মুয়াবিয়ার লোকদের জন্য পানি বন্ধ করে দিয়ে তাদের উচিত শিক্ষা দেবে যাতে সিরিয়রা তৃষ্ণায় মারা যায়। আমিরুল মোমেনিন বললেন, “তোমরা কি এইক নিষ্ঠুর পদক্ষেপ নিতে চাও যা কিরিয়গণ করেছে? কখনো কারো পানি বন্ধ করো না। যে কেউ পান করতে চায়- করুক, যে কেউ নিয়ে যেতে চায়- নিয়ে যাক।” ফলতঃ নদীর তীর দখল করার সত্ত্বেও কাউকে পানি গ্রহণে বাধা দেয়া হয়নি এবং পানি গ্রহণে সকলের পূর্ণ স্বাধীনতা ছিল।
নাহ্জ আল-বালাগা
আমিরুল মোমেনিন আলী ইবনে আবি তালিব
সংঙ্কলনঃ আশ-শরীফ আর-রাজী
ইংরেজি অনুবাদঃ সৈয়দ আলী রেজা
বাংলা অনুবাদঃ জেহাদুল ইসলাম
খোৎবা-৫১ পৃষ্ঠা নং ৭৩
No comments