ইমাম আলী সম্পর্কে বুখারী শরীফে কতিপয় গুরুত্বপূর্ণ হাদিস। There are several important hadiths about Imam Ali in Bukhari Sharif.
২০৮৮. পরিচ্ছেদঃ আবুল হাসান আলী ইব্ন আবূ তালিব কুরাইশী হাশিমী (রা)-এর মর্যাদা
নবী করীম (সাঃ) আলী (রা)-কে বলেছেন, তুমি আমার ঘনিষ্ঠ আপনজন আমি তোমার একান্ত শ্রদ্ধভাজন।
উমর (রা) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ওফাত পর্যন্ত তাঁর উপর সন্তুষ্ট ছিলেন

৩৪৩৭। কুতায়বা (র) ….. সালামা (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি
বলেন, আলী (রা) নবী করীম (সাঃ)-এর সাঙ্গে ভায়বার যুদ্ধে যান নি। কেননা তাঁর চোখে অসুখ
ছিল। এতে তিনি (মনে মনে) বললেন, আমি কি রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর সঙ্গে (জিহাদে) যাব না?
তারপর তিনি বেড়িয়ে পড়লেন এবং নবী (সাঃ)-এর সাথে মিলিত হলেন। যেদিন সকালে আল্লাহ্ বিজয়
দান করলেন, তার পূর্ব রাত্রে (সন্ধায়)রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বললেন, আগামী কাল সকালে আমি
এমন এক ব্যক্তিকে পতাকা প্রদান করব, অথবা বলেছিলেন যে এমন এক ব্যক্তি ঝান্ডা গ্রহণ
করবে যাঁকে আল্লাহ্ এবং তাঁর রাসূল (সাঃ) ভালবাসেন, অথবা বলেছিলেন, সে আল্লাহ্ ও তাঁর
রাসূলকে ভালবাসে। তাঁর মাধ্যমে আল্লাহ্ তাআলা বিজয় দান করাবেন। তারপর আমারা দেখতে পেলাম
তিনি হলেন আলী (রা), অথচ আমরা তাঁর সম্পর্কে এমনটি আশা করি নি। তাই সকলেই বলে উঠলেন,
এই যে আলী (রা)। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) তাঁকেই (পতাকা) দিলেন এবং তাঁর মাধ্যমেই আল্লাহ্
তাআলা বিজয় দিলেন।
৩৪৩৮। আবদুল্লাহ ইব্ন মাসলামা (র) ……. আবূ হাযিম (র) থেকে বর্ণিত, তিনি
বলেন, এক ব্যক্তি সাহল ইব্ন সাদ (রা)-এর খেদমতে যাদির হয়ে বললেন, মদীনার অমুক আমীর
মিম্বরের নিকটে বসে আলী (রা) সম্পর্কে অপ্রিয় কথা বলছে। তিনি বললেন, সে কি বলছে? তিনি
বলল, সে তাকে আবূ তুরাব (রা) বলে উল্লেখ করছে। সাহল (রা) (একথা শুনে) হেসে দিলেন এবং
বললেন, আল্লাহ্র কসম, তাঁর এ নামী নবী করীম (সাঃ)-ই রেখে ছিলেন। এ নাম অপেক্ষা তাঁর
অধিক প্রিয় আর কোন নাম ছিল না। আমি (নাম রাখার) ঘটনাটি জানার জন্য সাহল (রা) এর নিকট
আগ্রহ প্রকাশ করলাম এবং তাকে বললাম, হে আবূ আব্বাস, এটা কিভাবে হয়েছিল। তিনি বললেন,
(একদিন) আলী (রা) ফাতিমা (র) এর নিকট গেলেন কিছুক্ষণ পর ফিরে এসে মসজিদে শুয়ে রইলেন।
(অল্পক্ষণ পর) নবী করীম (সাঃ) এসে জিজ্ঞাসা করলেন, তোমার চাচাত ভাই (আলী) কোথায়? তিনি
বললেন, মসজিদে। রাসূলে করীম (সাঃ) তাঁর উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়লেন। পরে তিনি তাঁকে এমন
অবস্থায় পেলেন যে তাঁর চাঁদর পিঠ থেকে সরে গিয়েছে। তাঁর পিঠে ধুলা-বালি লেগে গেছে।
রাসূলে করীম (সাঃ) তাঁর পিঠ থেকে ধুলা-বালি ঝাড়তে ঝাড়তে বলতে লাগলেন, উঠে বস হে আবূ তুরাব। এ কথাটি তিনি
দু’বার বলেছিলেন।
৩৪৪১। মুহাম্মদ ইব্ন বাশ্শার (র)...... সা’দ (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম (সাঃ) (তাবূক যুদ্ধের প্রাক্কালে) আলী (রাঃ)-কে বলেছিলেন, তুমি কি সন্তষ্ট নাও যে, যেখাবে হারূন (আ) মূসা (আ) এর প্রতিনিধিত্বের মর্যাদা লাভ করেছিলেন, তুমিও আমার নিকট সেই মর্যাদা লাভ কর।
৩৪৪৭। আবদুল্লাহ ইব্ন আবদুল ওয়াহহাব (র)..... আবূ বকর (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, মুহাম্মদ (সাঃ)-এর পরিবারবর্গের প্রতি তোমরা অধিক সম্মান দেখাবে।
৪২৮। কুতায়বা ইব্ন সা‘ঈদ (র) .... সাহল ইব্ন
সা’দ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ফাতিমা (রা)-এর ঘরে এলেন, কিন্ত ‘আলী
(রা)-কে ঘরে পেলেন না। তিনি ফাতিমা (রা)-কে জিজ্ঞাসা কলেনঃ তোমার চাচাত ভাই কোথায়?
তিনি বললেনঃ আমার ও তাঁর মধ্যে কিছু ঘটেচে। তিনি আমার সাথে রাগ করে বাইরে চলে গেছেন।
আমার কাছে দুপুরের বিশ্রাম ও করেন নি। তার
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এক ব্যক্তিকে বললেনঃ দেখ তো সে কোথায়? সে ব্যক্তি খুঁজে এসে বললোঃ
ইয়া রাসূলাল্লাহ, তিনি মসজিদে শুয়ে আছেন। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এলেন, তখন ‘আলী (রা) কাত
হয়ে শুয়ে ছিলেন। তাঁর শরীরের এক পাশের চাদর পড়ে গিয়েছে এবং তাঁর শরীরে মাটি লেগেছে। রাসূলুল্রাহ (সাঃ) তার শরীরের
মাটি ঝেড়ে দিতে দিতে বললেনঃ উঠ, হে আবু তুরাব! উঠ, হে আবূ তুরাব!
বুখারী শরীফ
ষষ্ঠ খন্ড
আবূ ‘আবদুল্লাহ্ মুহাম্মদ ইব্ন ইসমা‘ঈল আল- বুখারী আল-জু‘ফী (র)
সম্পাদনা পরিষদ কর্তৃৃক সম্পাদিত
ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ
No comments