Banners

ওলীদের কারামত বা অলৌকিক ক্ষমতা

ওলী, নবীজির বংশধর, মাওলা পাক, মাওলা পাকের কারামত, মৃত ব্যাক্তি জীবিত করা, হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ)- এর ৩২ তম বংশধর এবং বড়পীর আব্দুল কাদের জিলানী (রাঃ)-এর ২০ তম বংশধর। যে এর ধরাধামে মাওলা পাক নামে ব্যাপক পরিচিত লাভ করেছেন। তার জীবনের বহু অলৌকিক ঘটনা ও কামামত প্রকাশ পেয়েছে তার মধ্যে একটি কারামত হল একজন মৃত মানুষকে জীবিত করা। বড়পীর আব্দুল কাদের জিলানী (রাঃ) তার তার হুকুমে বহু মৃত্য মানুষ জীবন পেয়েছে, মেয়ে বাচ্চা ছেলে হয়েছে, রান্না করা পশুপাখি জীবন্ত হয়ে উড়ে গেছে তার আমাদের সবাই জানা রয়েছে কিন্তু তার-ই ২০ তম বংশধর যাকে আমরা মাওলা পাক বলে চিনি ও জানি তাহার সমন্ধে ভক্তবৃন্দ ব্যাতীত কম লোকই জানি যে তিনিও মৃত্য মানুষকে জীবন দান করেছেন চলুন শুরু করা যাক মাওলা পাকের সেই অলৌকিক ঘটনাঃ

মৌলভী সৈয়দ আহসান উল করিম নামে বর্ধমানের ঝিলু গ্রামে বাস করতেনতাঁর মধ্যম পুত্র মহম্মদ ইয়াসিন এর একবার খুব জ্বর হলসব রকম চিকিৎসা করা হল, চিকিৎসার কোন ক্রটি রইল নাকিন্তু অবস্থার কোন উন্নতি হল নাক্রমের চিকিৎসকরা হাল ছেড়ে দিলেনসৌভাগ্যক্রমে মাওলাপাক সে সময়ে ঝিলু গ্রামে আসেনমৌলভী সাহেব পুত্রের মঙ্গল কামনায় মাওলাপাকের কাছে দোয়া চাইলেন কিন্তু মাওলা পাক তাঁকে কোনও আশার বাণী শোনালেন না বরং বলে দিলেন, যা হবার তা হবেসে বিষয়ে কারও কোনও হাত নেই কথা শুনে মৌলভি সাহেব কেঁদে ফেললেন

মাওলাপাক তাঁকে সান্ত্বনা দিয়ে বললেন- আল্লাহর দায়ার ওপর আপনি বিশ্বাস আস্তা হারাচ্ছেন কেন? মৌলভি সাহে আর কিছু বলতে পারলেন নাপরদিন মাওলাপাক মঙ্গলকোটে চলে গেলেনযাবার সময় মাওলাপাক বলে গেলেন- আল্লাহ ইচ্ছা করলে সবই সম্ভব, আপনার ছেলে ভাল হয়েও যেতে পারে পিতার মনে আশার সঞ্চার হলতিনি অসুস্থ পুত্রের বিছানার পাশে বসে তাকে নিরীক্ষন করতে লাগলেনকিন্তু ক্রমে রোগীর অবস্থা খারাপ হতে হতে অচিরেই তার জীবন-দীপ নিভিয়ে গেল

মৌলভি আহসান উল করিম মাওলাপাকের কাছে লোক মারফৎ খবর পাঠালেন এবং তাঁর সে সকর আত্মীয় তখন মঙ্গল কোটে মাওলা পাকের কাছে ছিলেন তাঁদের পুত্রের অন্ত্যেষ্টিতে যোগদান করার অনুরোধ জানিয়ে পত্র দিলেনপত্র বাহকের কাছে খবর জানার পর মাওলাপাক তাকে বাইরে অপেক্ষা করতে বলে হুজরা খানা প্রবেশ করলেনএবং সেই সঙ্গে মৌলভি সৈয়য় আল্লা হাফেজ এবং সাহেবজান মিঞাঁকে বললেন- এখুনি আপনার সংবাদ বাহকের সঙ্গে ঝিলু গ্রমে যানমৌলভী আহসান করিমের পুত্র এখন গভীর নিদ্রায় অচেতনদেখবেন, লোকে তাকে মৃত ভেবে করব দিয়ে না দেয়

এই তাবিজ নিয়ে যান, ছেলেটি জাগলে এই তাবিজ পানিতে ডুবিয়ে তাকে খেতে দেবেনভোর হতে না হতেই তাঁর পত্রবাহকের সঙ্গে দৌড়াতে দৌড়াতে মৌলভী সাহেবের বাড়িতে এসে পৌঁছালেনতাঁরা দেখলেন, ছেলেটিকে মেঝেতে একটি মাদুরে উপরে শোয়ানো হয়েছে এবং তার উপর চাদর দিয় ঢাকা দেওয়া হয়েছেমাওলাপাকের নির্দেশ জানিয়ে চাদর সরিয়ে দিয়ে দেখতে লাগলেন ছেলেটি কখন ওঠেদেখাগেল তার কানের পাশে কতকগুলি পিঁপড়ে জড় হয়েছে সেগুলি তাঁরা তাড়িয়ে দিলেন বটে কিন্তু তাঁরা বুঝতে পারলেন, ছেলেটির সমস্ত শরীর খুব শক্ত ঠান্ডাঅনেকক্ষণ আগেই তার মৃত্যু হয়েছেকিছুক্ষণ অপেক্ষা করে তাঁরা তাবিজ ধোয়া পানি মুখে ঢেলে দিলেন কিন্তু এক ফোঁটা পানিও মুখের ভিতর গেল না; সমন্ত পানি তার গাল বেয়ে পড়ে গেল তারা কিং কর্তব্য বিমূঢ় হয়ে ভাবতে লাগলেন- কী ভাবে তার মুখে পানি দেওযা যায়

কিন্তু আল্লাহর কী বিচিত্র লীলাছেলেটি হঠাৎ নিজের মুখ খুললো  এবং সঙ্গে সঙ্গেই মৌলভী সৈয়দ আল্লা হাফেজ এক চামচ পানি তার মুখে ঢেলে দিলেন এবং কী আশ্চর্য ছেলেটিও তা গিলে ফেললোউপস্থিত জনেরা বিস্ময়ের সঙ্গে চিৎকার করে উঠলেন- আলহামদো লিল্লাহ (Praise be to god)বালকটি তুলে খাটে শোয়ানো হলএই অবিশ্বাস্য ঘটনার সংবাদ ছড়িয়ে পড়তে দেরী হল নাযারা আল্লাহ, সাধু ফকির ইত্যাদিতে বিশ্বাস করত না তারাও এই অলৌকিত ঘটনা দেখতে জড়ো হলো বালকটি ক্রমে সুস্থ হয়ে উঠল পিঁপড়ে তার কানের কিছু অংশ খেয়ে ফেলেছিল, সেই ক্ষতটিও ধীরে ধীরে শুকিয়ে গেলকিন্তু তার দাগ আজীবন থেকে গিয়েছিল

কিতাবঃ মাওলা পাক (আঃ) সংক্ষিপ্ত জীবনী (আবুল হাসনাত কাদেরী) জিলানী প্রকাশনী

No comments

Powered by Blogger.