আকাশ, পৃথিবী ও আদম সৃষ্টি সম্পর্কে। About the creation of the heavens, the earth and the Adam.
খোৎবা-১
আকাশ, পৃথিবী ও আদম সৃষ্টি সম্পর্কে
প্রতিষ্ঠিত প্রশংসা আল্লাহ্র। তাঁর গুণরাজী কোন বর্ণনাকারী বর্ণনা করে শেষ করতে পারে না। তাঁর নেয়ামতসমূহ গণনাকারীগণ গনে শেষ করতে পারে না। প্রচেষ্টাকারীগণ তাঁর নেয়ামতের হক আদায় করতে পারে না। আমাদের সমুদয় প্রচেষ্টা ও জ্ঞান দ্বারা তাঁর পুরিপূর্ণ আনুগত্য প্রকাশ করা সম্ভব নয় এবঙ আমাদের সমগ্র বোধশক্তি দ্বারা তাঁর মহাত্ম্য অনুভব করা সম্ভব নয়। তাঁর সফিাত বর্ণনার কোন পরিসীমা নির্ধারিত নেই এবং সেজন্য কোন লেখা বা বক্তব্য, কোন সময় বা স্থিতিকাল নির্দিষ্ট করা হয়নি। তিনি নিজ কৃদরতে সৃষ্টিকে অস্তিত্বশীল করেছেন, আপন করুণায় বাতাসকে প্রবাহিত করেছেন এবং শিলীভূত পাহাড় দ্বারা কম্পমান পৃথিবীকে সুদৃঢ় করেছেন।
আল্লাহ্র মা’রেফাতই দ্বীনের ভিত্তি। এ মা’রেফাতের পরিপূর্ণতা আসে তাঁকে সত্য বলে সাক্ষ্য দেয়ায়; সাক্ষ্যের পরিপূর্ণতা হয় তাঁর এককত্বের বিশ্বাসে; বিশ্বাসের
পরিপূর্ণতা হয় তাঁকে পরম পরিত্ররূপে নিরীক্ষণ করার জন্য আমল করায়; আমলের পরিপূর্ণতা অর্জিত হয় তাঁর প্রতি কোন সিফাত(গুণ)
আরোপ না করায়। কারণ কোন কিছুতে
গুণ আরোপিত হলে এটাই প্রমাণিত হয় যে, আরোপিত বিষয় হতে গুণ পৃথক এবং যার ওপর গুণ আরোপিত
হয় সে গুণ হতে পৃথক। যারা আল্লাহ্তে সত্তার বহির্ভূত কোন সিফাত বা
গুন আরো করে তারা তাঁর সদৃশতার স্বীকৃতি দেয়; যারা তাঁর সদৃশতা
স্বীকার করে তারা দ্বৈতবাদের স্বীকৃতি দেয়; যার তাঁর দ্বৈতের
স্বীকৃতি দেয় তারা তাঁকে খন্ডভাবে দেখে; যারা তাঁকে খন্ডভাবে
দেখে তারা তাঁকে ভুল বুঝে; যারা তাঁকে ভুল বুঝে তারা তাঁকে চিনতে
অক্ষম; যার তাঁকে চিনতে অক্ষম তারা তাঁর ক্রটি স্বীকার করে;
যার তাঁর ক্রটি স্বীকার করে তারা তাঁকে সীমাবদ্ধতায় আবদ্ধ করে।
যদি কেউ বলে তিনি কি, সে জেনে রাখুক, তিনি সবকিছু
ধারণ করে আছেন; এবং যদি কেউ বলে তিনি কিসের উপর আছেন,
সে জেনে নাও, তিনি নির্দিষ্ট কোন কিছুর ওপর নেই। যদি কেউ তাঁর অবস্থিতি নির্দিষ্ট কোন স্থানে মনে করে সে কিছু
কিছু স্থানকে আল্লাহবিহীন মনে করলো। তিনি ঐ সত্তা
যার আগমন সৃষ্টি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ঘটেনি। তিনি অস্তিত্বশীল, কিন্তু অনস্তিত্ব হতে অস্তিত্বে
আসেননি। তিনি সব কিছুতেই আছেন, কিন্তু কোন প্রকার ভৌত নৈকট্য
দ্বারা নয়। তিনি সব কিছু হতে ভিন্ন, কিন্তু বস্তুগত দ্বান্দ্বিকতা
ও বিচ্ছেদের মধ্য দিয়ে নয়। তিনি কর্ম সম্পাদন
করেন কিন্তু বিচলন ও হাতিয়ারের মাধ্যমে নয়। তিনি তখনও দেখেন যখন তাঁর সৃষ্টির মধ্যে কেউ দেখার মত থাকে না। তিনিই একমাত্র একক, কেন না এমন কেউ নেই যার সাথে তিনি সঙ্গ রাখতে
পারেন অথবা যার অনুপস্থিতি তিনি অনুভব করেন।
নাহ্জ আল-বালাগা
মূলঃ আমিরুল মোমেনিন
আলী ইবনে আবি তালিব
সংঙ্কলনঃ আশ-শরীফ আর-রাজী
ইংরেজি অনুবাদঃ
সৈয়দ আলী রেজা
বাংলা অনুবাদঃ
জেহাদুল ইসলাম
No comments