Banners

ইমাম আলী সম্পর্কে বুখারী শরীফে কতিপয় গুরুত্বপূর্ণ হাদিস। There are several important hadiths about Imam Ali in Bukhari Sharif.


২০৮৮. পরিচ্ছেদঃ আবুল হাসান আলী ইব্‌ন আবূ তালিব কুরাইশী হাশিমী (রা)-এর মর্যাদা নবী করীম (সাঃ) আলী (রা)-কে বলেছেন, তুমি আমার ঘনিষ্ঠ আপনজন আমি তোমার একান্ত শ্রদ্ধভাজন। উমর (রা) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ওফাত পর্যন্ত তাঁর উপর সন্তুষ্ট ছিলেন

আহলে বাইয়াত এর মর্যাদা, ইমাম আলী, পাকপাঞ্জাতন, বুখারী শরীফ, ৩৪৩৬। কুতারাবা ইব্‌ন সাঈদ (রা)…… সাহল ইব্‌ন সাদ (রা) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন, আমি আগামীকাল এমন এক ব্যক্তিকে পতাকা দিব যাঁর হাতে আল্লাহ্ বিজয় দান করবেন। রাবী বলেন, তারা এই আগ্রহ ভরে রাত্রি যাপন করলেন যে, কাকে ঐ পতাকা দেয়া হবে। যখন সকাল হল তখন সকলেই রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এ নিকট গিয়ে হাযির হলেন। তাদের প্রত্যেকেই এ আশা পোষণ করছিলেন যে পতাকা তাকে দেয়া হবে। তারপর তিনি বললেন, আলী ইব্‌ন আবূ তালিক কোথায়? তাঁরা বললেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ (সাঃ) তিনি চক্ষু রোগে আক্রান্ত। তিনি বললেন, কাউকে পাঠিয়ে তাঁকে আমার কাছে নিয়ে এস। যখন তিনি এলেন, তখন রাসূল (সাঃ) তাঁর দু‘চোখে থুথু লাগিয়ে দিলেন এবং তাঁর জন্য দু‘আও করলেন। এতে তিনি এমন সুস্থ হয়ে গেলেন যেন তাঁর চোখে কোন রোগই ছিল না। রাসূলে করীম (সাঃ) তাঁকে পতাকাটি দিলেন। আলী (রা) বললেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ, তারা যতক্ষণ পর্যন্ত আমাদের মত না হয়ে যাবে ততক্ষণ পর্যন্ত আমি তাদের সাথে যুদ্ধ চালিয়ে যাব। তিনি বললেন, তুমি সোজা অগ্রসর হতে থাক এবং তাদের আঙ্গিনায় উপনীত হয়ে তাদেরকে ইসলাম গ্রহণের দাওয়াত দাও। তাদের উপর আল্লাহ্‌র যে দায়িত্ব ও কর্তব্য বর্তাবে তাও তাদের জানিয়ে দাও। আল্লাহ্‌র কসম, তোমার দ্বারা যদি একটি মানুষও হিদায়েত প্রাপ্ত হয়, তা হবে তোমার জন্য লাল রঙ্গের উট প্রাপ্তির চেয়েও অধিক উত্তম।

৩৪৩৭। কুতায়বা (র) .. সালামা (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আলী (রা) নবী করীম (সাঃ)-এর সাঙ্গে ভায়বার যুদ্ধে যান নি। কেননা তাঁর চোখে অসুখ ছিল। এতে তিনি (মনে মনে) বললেন, আমি কি রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর সঙ্গে (জিহাদে) যাব না? তারপর তিনি বেড়িয়ে পড়লেন এবং নবী (সাঃ)-এর সাথে মিলিত হলেন। যেদিন সকালে আল্লাহ্ বিজয় দান করলেন, তার পূর্ব রাত্রে (সন্ধায়)রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বললেন, আগামী কাল সকালে আমি এমন এক ব্যক্তিকে পতাকা প্রদান করব, অথবা বলেছিলেন যে এমন এক ব্যক্তি ঝান্ডা গ্রহণ করবে যাঁকে আল্লাহ্ এবং তাঁর রাসূল (সাঃ) ভালবাসেন, অথবা বলেছিলেন, সে আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলকে ভালবাসে। তাঁর মাধ্যমে আল্লাহ্ তাআলা বিজয় দান করাবেন। তারপর আমারা দেখতে পেলাম তিনি হলেন আলী (রা), অথচ আমরা তাঁর সম্পর্কে এমনটি আশা করি নি। তাই সকলেই বলে উঠলেন, এই যে আলী (রা)। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) তাঁকেই (পতাকা) দিলেন এবং তাঁর মাধ্যমেই আল্লাহ্ তাআলা বিজয় দিলেন।

৩৪৩৮। আবদুল্লাহ ইব্‌ন মাসলামা (র) ……. আবূ হাযিম (র) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক ব্যক্তি সাহল ইব্‌ন সাদ (রা)-এর খেদমতে যাদির হয়ে বললেন, মদীনার অমুক আমীর মিম্বরের নিকটে বসে আলী (রা) সম্পর্কে অপ্রিয় কথা বলছে। তিনি বললেন, সে কি বলছে? তিনি বলল, সে তাকে আবূ তুরাব (রা) বলে উল্লেখ করছে। সাহল (রা) (একথা শুনে) হেসে দিলেন এবং বললেন, আল্লাহ্‌র কসম, তাঁর এ নামী নবী করীম (সাঃ)-ই রেখে ছিলেন। এ নাম অপেক্ষা তাঁর অধিক প্রিয় আর কোন নাম ছিল না। আমি (নাম রাখার) ঘটনাটি জানার জন্য সাহল (রা) এর নিকট আগ্রহ প্রকাশ করলাম এবং তাকে বললাম, হে আবূ আব্বাস, এটা কিভাবে হয়েছিল। তিনি বললেন, (একদিন) আলী (রা) ফাতিমা (র) এর নিকট গেলেন কিছুক্ষণ পর ফিরে এসে মসজিদে শুয়ে রইলেন। (অল্পক্ষণ পর) নবী করীম (সাঃ) এসে জিজ্ঞাসা করলেন, তোমার চাচাত ভাই (আলী) কোথায়? তিনি বললেন, মসজিদে। রাসূলে করীম (সাঃ) তাঁর উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়লেন। পরে তিনি তাঁকে এমন অবস্থায় পেলেন যে তাঁর চাঁদর পিঠ থেকে সরে গিয়েছে। তাঁর পিঠে ধুলা-বালি লেগে গেছে। রাসূলে করীম (সাঃ) তাঁর পিঠ থেকে ধুলা-বালি ঝাড়তে ঝাড়তে  বলতে লাগলেন, উঠে বস হে আবূ তুরাব। এ কথাটি তিনি দু’বার বলেছিলেন।

৩৪৪১ মুহাম্মদ ইব্ন বাশ্শার ()...... সা (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম (সাঃ) (তাবূক যুদ্ধের প্রাক্কালে) আলী (রাঃ)-কে বলেছিলেন, তুমি কি সন্তষ্ট নাও যে, যেখাবে হারূন () মূসা () এর প্রতিনিধিত্বের মর্যাদা লাভ করেছিলেন, তুমিও আমার নিকট সেই মর্যাদা লাভ কর

৩৪৪৭ আবদুল্লাহ ইব্ন আবদুল ওয়াহহাব ()..... আবূ বকর (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, মুহাম্মদ (সাঃ)-এর পরিবারবর্গের প্রতি তোমরা অধিক সম্মান দেখাবে


৪২৮। কুতায়বা ইব্‌ন সা‘ঈদ (র) .... সাহল ইব্‌ন সা’দ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ফাতিমা (রা)-এর ঘরে এলেন, কিন্ত ‘আলী (রা)-কে ঘরে পেলেন না। তিনি ফাতিমা (রা)-কে জিজ্ঞাসা কলেনঃ তোমার চাচাত ভাই কোথায়? তিনি বললেনঃ আমার ও তাঁর মধ্যে কিছু ঘটেচে। তিনি আমার সাথে রাগ করে বাইরে চলে গেছেন। আমার কাছে দুপুরের বিশ্রাম  ও করেন নি। তার রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এক ব্যক্তিকে বললেনঃ দেখ তো সে কোথায়? সে ব্যক্তি খুঁজে এসে বললোঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ, তিনি মসজিদে শুয়ে আছেন। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এলেন, তখন ‘আলী (রা) কাত হয়ে শুয়ে ছিলেন। তাঁর শরীরের এক পাশের চাদর পড়ে গিয়েছে এবং তাঁর  শরীরে মাটি লেগেছে। রাসূলুল্রাহ (সাঃ) তার শরীরের মাটি ঝেড়ে দিতে দিতে বললেনঃ উঠ, হে আবু তুরাব! উঠ, হে আবূ তুরাব!

বুখারী শরীফ
ষষ্ঠ খন্ড
আবূ ‘আবদুল্লাহ্ মুহাম্মদ ইব্‌ন ইসমা‘ঈল আল- বুখারী আল-জু‘ফী (র)
সম্পাদনা পরিষদ কর্তৃৃক সম্পাদিত
ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ

No comments

Powered by Blogger.