বদরের যুদ্ধ
নবী করীম (সঃ) যখন মক্কা ছেড়ে মদিনায় হিজরত করে মদিনায় বসবাস শুরু করে তখনও মক্কার কোরায়েশগণ মদীনার সংবাদ পুরোপুরি ভাবেই রাখতে। মক্কার কাফেরগণ দেখলো যে, যা তারা ভেবেছিল তাই তো ঘটে চলেছে। মদীনায় মুহাম্মাদ (সঃ) ও মুসলমানের শক্তি ক্রমেই বৃদ্ধি পাইতেছে। তাই কোরায়েশদের মনে হিংসার আগুন জ্বলে পুড়ে যাচ্ছিল।

আল্লাহর পক্ষে হতে নবী
করীম (সঃ) এর প্রতি প্রথম দিকে কাফেরদের সাথে যুদ্ধ বিগ্রহ করার নির্দেশ ছিল না। কিন্ত মদীনায় হিজরত করার পর আল্লাহর তরফ থেকে নির্দেশ এল, “যারা তোমদের সাথে যুদ্ধ করবে, তুমিও তাদের সাথে যুদ্ধ করা।”
প্রথমতঃ কিছুদিন যাবৎ ছোট খাট কয়েকটি যুদ্ধ সংঘটিত হল।
প্রতি বৎসর বৃহৎ মেলা অনুষ্ঠিত হত মদীনা থেকে অনতিদূরে যে স্থানের নাম ছিল বদর। দ্বিতীয় হিজরী সনে এই বদর নামক প্রান্তরে মুসলমান এবং কাফেরদের মধ্যে এক ভয়ঙ্কর যুদ্ধে আল্লাহ তায়ালা মুসলমানদের জয়যুক্ত করেন।
তৎকালীন কোরায়েশ নেতা আবু সুফিয়ান সিরিয়া থেকে কিছু বাণিজ্য পণ্য নিয়ে মক্কা রওয়ানা করছিল। মুসলমানগণ পথের মধ্যে তাকে বাঁধা দিতে চাইলেন। খবরটি অতি দ্রুত মক্কায় পৌঁছে গেল এবং মক্কা থেকে বহু সংখ্যক লোক আবু সুফিয়ানের সাহায্যের জন্য এগিয়ে এল। কিন্তু আবু সুফিয়ান পূর্বেই সেই স্থান থেকে সরে পড়েছিলো। আর যারা তাকে সাহায্য করার জন্য এসেছিল বদরের প্রান্তরে তাদের সাথে মুসলমানদের সংর্ঘষ ঘটল।
পূর্ণ প্রস্তুতি গ্রহণ করেই কাফেরগণ যুদ্ধের জন্য বদর প্রান্তরে এসেছিল। কাফের বাহিনীতে মোট ১০০০ যোদ্ধা ছিল। সেই বাহিনী প্রধান ছিল কোরায়েশ বীর ওতবা। আর কয়েকজন প্রথম শ্রেণীর কোরায়েশ নেতা এবং বিখ্যাত বিখ্যাত যোদ্ধাগণ তাদের সহকারী ছিল। আবু জেহেলও তাদের একজন এই যুদ্ধে হাজির ছিল। এই ব্যাক্তি মুসলমানদের প্রধান শত্রু ছিল।
অন্যদিকে মুসলমাদের যোদ্ধার সংখ্যা ছিল মাত্র ৩১৩ জন। সমগ্র বাহিনীতে মাত্র ০৩ টি অশ্ব এবং ৭০ টি উট ছিল।এছাড়া প্রয়োজনীয় যুদ্ধের অস্ত্রও ছিল না মুসলমান বাহিনীর কাছে ।
যেখান দুই দলের যোদ্ধা সম্মুখে হল; সে জায়গাটির নাম হচ্ছে বদর প্রান্তর, সেটা কান্ড ময়দান। আবরদের লড়াইয়ের নিয়মানুযায়ী প্রথম কোরায়েশ দল থেকে ওতবা, সোয়েরা এবং অলিদ এই ০৩ জন নামজাদা বীর ময়দানের এসে মুসলমানদের যুদ্ধে আহবান করল।
নবী
করীম (সঃ) তাদের বিরুদ্ধে হামজা (রাঃ), ওবায়দা (রাঃ) এবং আলী (রাঃ)-কে বদরের ময়দানে পাঠালেন।
মহাবীর হামযাহ (রাঃ) অতি সহজেই ওতবাকে পরাভূত করে তাকে একবারে জাহান্নামে পাঠিয়ে দিলেন। হযরত আরী (রাঃ) তাঁর প্রথম আঘাতেই আলিদকে মৃত্যু পথযাত্রী করে জাহান্নামে পাঠিয়ে দিলেন। কিন্তু হযরত ওবায়দা (রাঃ) সোয়েবার হাতে শহীদ হয়ে জান্নাতে চলে গেলন। ওবায়দা (রাঃ) কে শহীদ দেখে হযরত আলী (রাঃ) ক্ষুধিত ব্যাঘ্রের ন্যায় ছুটে এসে তরবারীর এক আঘাতে সোয়াবার দেহ দু’খন্ড করে করে জাহান্নামে পাঠিয়ে দিলেন। এবার উভয় পক্ষের সাথে সৈন্য যুদ্ধে লিপ্ত হল। ভীষণ যুদ্ধ আরম্ভ হয়ে গেল। শেরে খোদা হযরত আলী (রাঃ) ও মহাবীর হামযাহ (রাঃ) শক্র সৈন্যদের কচু কাটার মতো ধ্বংস করে চললেন। অন্যদিকে শক্রদলও দুর্দান্ত রূপে যুদ্ধ চালাতে লাগল। কিন্তু আল্লাহর সাহায্য প্রাপ্ত মুসলিম সেনাদের সাথে যুদ্ধে ধর্মদ্রোহী মুশরেকগণ যুদ্ধ ময়দানে আর কতক্ষন বেচে থাকতে পারে? কিছুক্ষণের মধ্যেই কোরায়েশ সেনাগণ পরাজিত হয়ে গেল।
মহাবীর হামযাহ (রাঃ) অতি সহজেই ওতবাকে পরাভূত করে তাকে একবারে জাহান্নামে পাঠিয়ে দিলেন। হযরত আরী (রাঃ) তাঁর প্রথম আঘাতেই আলিদকে মৃত্যু পথযাত্রী করে জাহান্নামে পাঠিয়ে দিলেন। কিন্তু হযরত ওবায়দা (রাঃ) সোয়েবার হাতে শহীদ হয়ে জান্নাতে চলে গেলন। ওবায়দা (রাঃ) কে শহীদ দেখে হযরত আলী (রাঃ) ক্ষুধিত ব্যাঘ্রের ন্যায় ছুটে এসে তরবারীর এক আঘাতে সোয়াবার দেহ দু’খন্ড করে করে জাহান্নামে পাঠিয়ে দিলেন। এবার উভয় পক্ষের সাথে সৈন্য যুদ্ধে লিপ্ত হল। ভীষণ যুদ্ধ আরম্ভ হয়ে গেল। শেরে খোদা হযরত আলী (রাঃ) ও মহাবীর হামযাহ (রাঃ) শক্র সৈন্যদের কচু কাটার মতো ধ্বংস করে চললেন। অন্যদিকে শক্রদলও দুর্দান্ত রূপে যুদ্ধ চালাতে লাগল। কিন্তু আল্লাহর সাহায্য প্রাপ্ত মুসলিম সেনাদের সাথে যুদ্ধে ধর্মদ্রোহী মুশরেকগণ যুদ্ধ ময়দানে আর কতক্ষন বেচে থাকতে পারে? কিছুক্ষণের মধ্যেই কোরায়েশ সেনাগণ পরাজিত হয়ে গেল।
মুসলিম মুজাহিদগণ তখন পরাজিত ও জীবিত শক্র সৈন্যদের বন্দী করতে লাগলেন। এই যুদ্ধে কোরায়েশদের প্রধান প্রধান বীরগণ সহ মোট ৭০ জন বন্দী হয়েছিল। এছাড়া নিহত হয়েছে অনেক নিহতদের মধ্যে আবু জেহেল, ওতবা প্রভৃতি কোরায়েশ বীর উল্লেখযোগ্য।এই যুদ্ধটি সংঘটিত হয়েছিল দ্বিতীয় হিজরী সতের ১২ ই রমযান।
বদরের যুদ্ধে মুসলমানদের পক্ষে ২২ জন সাহাবা শহীদ হয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে ১৬ জন ছিলেন আনসার এবং ৬ জন ছিলেন মুজাহিদ।
মুসলমানগণ বন্দী সেনাদের সাথে অত্যান্ত নম্র, ভদ্র এবং উত্তম ব্যবহার প্রদর্শন করলেন এবং তাদের খুবই শান্তিপুর্ণ অবস্থায় রাখলেন। বন্দীগণের মধ্যে যারাি ধনী ছিলেন তাদের মুক্তি পনের বিনিময়ে মুক্তি করে দেয়া হলে। আর যারা গরীব ছিল তাদের প্রতি একেক জনার দশজন করে নিরক্ষর মুসলমানকে লেখাপড়া শিক্ষা দেয়ার নির্দেশ দেয়া হলো। এভাবে বদরের যুদ্ধ সমাপ্ত হলো।
No comments