ওহুদের যুদ্ধ
ওহুদের যুদ্ধ

পরের বৎসরই মক্কাবাসীদের মনে মদীনার মুসলমানদের প্রতি প্রতিশোধ গ্রহণের জন্য কোরায়েশ প্রধান আবু সুফিয়ানের নেতৃত্বে তারা তাদের বদরের পরাজয়ের বদলার নেওয়ার জন্য মদীনার দিকে যুদ্ধের অভিযান করল। এই অভিযানে বিধর্মী বাহিনীত সৈন্য সংখ্যা ছিল ০৩ হাজারেরও বেশী।
হযরত মুহাম্মদ (সঃ)-এর পিতৃব্য আব্বাস (রাঃ) তখনও ইসলাম গ্রহণ করেন নাই। তিনি বিধর্মীদের সাথেই মক্কাই অবস্থান করতেন। তিনি তাঁর ভ্রাতুস্পুত্রের বিরুদ্ধে কোরায়েশদের যুদ্ধের এই আয়োজন দেখে হতাশাগ্রস্থ হয়ে গোপনে লোক মারফত পত্র পাঠিয়ে মক্কার এসব ঘটনা নবী করীম (সঃ)-কে জানিয়ে ছিলেন।
যখন শত্রু বাহিনী মদীনার প্রায় নিকট এসে পৌঁছাছে, তাই নবী করীম (সঃ) বুঝলেন বিলম্ব করার সুযোগ ছিল না। ফলে নবী করীম (সঃ) যত তাড়াতাড়ি সম্ভব গতিরোধ করতে বেরিয়ে পড়লেন। এই বাহিনীতে মুনাফেক নেতা আবদুল্লাহ বিন উবািইয়ের অনুগত ৩০০ লোক ছিল। মুসলিম বাহিনী কিছু দূর অগ্রসর হওয়ার পর আবদুল্লাহ বিন উবাই তার ৩০০ লোক নিয়ে বাহিনী থেকে বের হয়ে গেল। মুসলিম বাহিনীত তখন মাত্র ৭০০ সৈন্য ছিল।
নবী করীম (সঃ) কোন সংকোচ না নিয়ে আল্লাহর উপর ভরসা করে তা নিয়েই অগ্রসর হলেন। মদীনার থেকে তিন মাইল দূরবর্তী ওহুদ নামক প্রান্তরে কোরায়েশ বাহিনীর সাথে সাক্ষাত হল। মুসলিম বাহিনীর পিছনে পাহাড় ও সম্মুখে প্রান্তর রেখে তাঁদের অবস্থান নিল। পাহাড়ের পাদদেশে একটি সংকীর্ণ গীরিপথ ছিল; ঔ পথে শক্রগণ এস যাতে পিছনে থেকে আক্রমণ করতে না পারে তার জন্য নবী করীম (সঃ) ৫০ জন তীরান্দাজ সেনা সেখানে নিযুক্ত করে বললেন যে, মুসলিম বাহিনী যুদ্ধে জয়লাভ করুক কিংবা পরাজিত হোক কোন অবস্থাতেই যেন তারা নিজেদের স্থান পরিত্যাগ না করে।
নবী করীম (সঃ) কোন সংকোচ না নিয়ে আল্লাহর উপর ভরসা করে তা নিয়েই অগ্রসর হলেন। মদীনার থেকে তিন মাইল দূরবর্তী ওহুদ নামক প্রান্তরে কোরায়েশ বাহিনীর সাথে সাক্ষাত হল। মুসলিম বাহিনীর পিছনে পাহাড় ও সম্মুখে প্রান্তর রেখে তাঁদের অবস্থান নিল। পাহাড়ের পাদদেশে একটি সংকীর্ণ গীরিপথ ছিল; ঔ পথে শক্রগণ এস যাতে পিছনে থেকে আক্রমণ করতে না পারে তার জন্য নবী করীম (সঃ) ৫০ জন তীরান্দাজ সেনা সেখানে নিযুক্ত করে বললেন যে, মুসলিম বাহিনী যুদ্ধে জয়লাভ করুক কিংবা পরাজিত হোক কোন অবস্থাতেই যেন তারা নিজেদের স্থান পরিত্যাগ না করে।
অতপর যথা সময়ে ভীষণ যুদ্ধ শুরু হয়ে গেল। মুসলিম বাহিনী সংখ্যায় কম থাকার পরও প্রথম বারে এমন প্রচন্ড বেগে শক্রুর ওপরে ঝাপিয়ে পড়ল যে, আক্রমণের বেগ সামলাতে না পেরে শত্রুগণ ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়ল। ফলে যুদ্ধের ময়দান সম্পূর্ণ রূপে মুসলমানদের অনুকূলে এসে গেল। পলায়নপর শত্রু বাহিনীর পরিত্যাক্ত মালামাল মুসলিম সেনারা সংগ্রহ করতে লাগল।
ঠিক এই সময় মুসলিম সেনারা একটি চরম ভূল করে ফেলেন গীরিপথ পাহারায় রত তীরন্দাজ সেনার মুসলমানদের জয় দেখে তারাও এসে শত্রুর মালামাল সংগ্রহ করতে আরম্ভ করল। এটা তারে এক মস্ত বড় ভূল। গীরিপথ মুখে তখন মাত্র ১২ জন মুসলিম সৈন্য ছিল।
ঠিক এই সময় মহাবীর খালেদ ইবনে অলীদ সুযোগ বুঝে অতি দ্রুত উক্ত গীরিপথ অতিক্রম করে মুসলিম বাহিনীকে পিছন থেকে অতর্কিত আক্রমণ করে বসল। বিজয়ী মুসলিম বাহিনী এবার হঠাৎ আক্রান্ত হয়ে হতভম্ব হয়ে গেল। তখন পালায়নরত শক্র সৈন্যরাও ফিরে দাঁড়িয়ে মুসলিম বাহিনীকে আক্রমণ করল। মুসলীমগণ এখন সম্মুখে পশ্চাতে দু’দিকে থেকে আক্রান্ত হয়ে দিশেহারা হয়ে পড়ল। দু’দিকের আক্রমণ সহ্য করতে না পেরে কতক মুসলিম সৈন্য যুদ্ধক্ষেত্রও পরিত্যাগ করল। আর কতক সৈন্য প্রাণপণে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে লাগল। একটি ভূলের জন্য মুসলিমগণ নিশ্চিত জয় থেকে বঞ্চিত হয়ে পরাজয়ের মুখোমুখি এস দাঁড়াল।
মহাবীর হামযাহ (রাঃ) যুদ্ধক্ষেত্রে এক প্রান্তে শক্রসৈন্যদের অতর্কিত হামলায় মারাত্মক ভাবে আহত হলেন এবং আঘাতের তীব্রতার সাথে সাথেই শাহাদাত বরণ করলেন। নবী করীম (সঃ) কয়েক জন সাহাবা পরিবেষ্টিত হয়ে দাড়িয়ে ছিলেন, যেন নবীজির কোন প্রকার আঘাত না লাগে কিন্তু সেখানে শক্রদের হামলার বেগ ছিল সর্বাপেক্ষা বেশী। সেই সময় নবী করীম (সঃ)-কে লক্ষ্য করে বৃষ্টির মতো অসংখ্য তীর বর্ষিত হচ্ছিল। নবী করীম (সঃ)-কে অক্ষত রাখার জন্য সাহাবীগণ শক্রর সকল হামলা নিজেদের দেহে বরণ করে নিয়েছিলেন।
এমনি সময় এক পাপিষ্ট শক্রর প্রচন্ড পাথর নিক্ষেপে করে নবী করীম (সঃ) পবিত্র ৪ টি দাত শহীদ করেন। এবং অন্য পাপিষ্ট শত্রু তাঁর পবিত্র মস্তক লক্ষ্য তরবারী দিয়ে ভীষন বেগে আঘাত করে। সাহাবী তালহা সেই আঘাত হাতে ঠেকাবার চেষ্টা করলে তার আঙ্গুলি গুলো কেটে পড়ে যায়। আঘাতের বেগ এত প্রচন্ড ছিল যে, উহা নবী করীম (সঃ)-এর মস্তকোপরি বর্মে লেগে তার দুটো লৌহ কড়া তাঁর ললাটে বিদ্ধ হয়ে যায়। সেই কড়া দুটো এত বেশি গিয়েছিল যে সাহাবী আবু ওবায়দা তাঁর দাঁত দিয়ে কামড়ে ধরে তা উত্তোলন করতে হয়েছিল।
নবী করীম (সঃ)-এর সারা দেহে রক্তান্ত হয়ে গেল। সাহাবীগণ তাঁকে তুলে নিয়ে গিয়ে পাহাড়ের চূড়ায় আরোহণ করলেন। এসময় কাফেরগণ রটিয়ে দিল মুহাম্মদা (সাঃ) এর মৃত্যু হয়েছে। আবুবকর, ওমর, ওসমান, আলী প্রভৃতি সাহাবা নিহত হয়েছে।
তখনি হযরত ওমর (রাঃ) বজ্রস্বরে ঘোষণা করলেন, আল্লাহর নবী করীম (সঃ) জীবিত আছেন এবং আমরাও সকলে তোমাদের উচিত শিক্ষা দিবার জন্য আল্লাহর আমাদের জীবিত রেখেছেন।
তখন কাফেরগণ পাহাড়ের চূড়ায় উটতে চাইলে মুসলিম সৈন্যরা তাদের উপর পাথর বর্ষন করতে লাগলো। ফলে তারা আর পাহাড়ে উঠতে পারলো না বরং পিছনে ফিরে যেতে কাফেররা বাধ্য হল।
তখন কাফেরগণ পাহাড়ের চূড়ায় উটতে চাইলে মুসলিম সৈন্যরা তাদের উপর পাথর বর্ষন করতে লাগলো। ফলে তারা আর পাহাড়ে উঠতে পারলো না বরং পিছনে ফিরে যেতে কাফেররা বাধ্য হল।
এই ওহুদের যুদ্ধে ৭০ জন মুসলিম মুজাহিদ শহীদ হন। কোন প্রকার জয় পরাজয ব্যতীতই যুদ্ধটি বন্ধ হয়ে গেল। অবশেষে কোরায়েশরা মক্কার দিকে রওনা করলেন এবং মুসলমানরা মদীনার দিকে চলে গেলেন।
এই যুদ্ধে সৈন্যগণ নেতা/সেনাপ্রতি/রাসুল (সাঃ)-এর কথা সঠিক ভাবে পালন না করার জন্য তাদের দলের বিশাল বড় একটি ক্ষতি করে ফেলেন।
এই যুদ্ধে সৈন্যগণ নেতা/সেনাপ্রতি/রাসুল (সাঃ)-এর কথা সঠিক ভাবে পালন না করার জন্য তাদের দলের বিশাল বড় একটি ক্ষতি করে ফেলেন।
No comments