Banners

ঔষুধ কেনা নিয়ে হয়রানি

কাঁটা ঘায়ে নুরের ছিটা  কথাটির সাথে সবাই পরিচিত। কিন্তু আজ আমি এমনি একটি ঘটনা আলোচনা করবো যা আমাদের মানব সমাজ যে কতটা নিচু মনের  হয়ে যাচ্ছে তেমনি একটি আলোচনা, এখানে তেমনি  রয়েছে একটি শিক্ষনীয় ঘটনা।
সাধারণ কখন  মানুষ  বেশি অসহায় হয়ে পড়ে,  আমার মতে  যখন  কোন মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ে।আজকে এমন একটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো  হয়তো আপনারা  এই পরিস্থিতির সম্মুখিন হতে পারেন। আমার পিতা খুবই অসুস্থ হয়েছিল। একজন ভাল ডাক্তারের সাথে পরার্মশ করলো ডাক্তার সাহেব কিছু দিন চিকিৎসা করার পরও কোন আরগ্য লাভ করলো না, অবশেষে ডাক্তার  অপারেশন করার পরার্মশ দিল বললো অপারেশন না করা ছাড়া আর কোন  প্রকার চিকিৎসা দিতে পারবো না। দ্রুত অপারেশন না করলে আরো বড় ধরনের কোন সমস্যা হতে পারে।

কি আর করা ডাক্তারের পরার্মশ অনুযায়ী একটা প্রাইভেট হাসপাতালে গিয়ে অপারেশন করা হলো, সেই অপারেশন করা  হয়েছিল চুক্তির উপর মানে হলো ডাক্তার অপারেশন করে দিবে সব খরচ সহকারে শুধু  হাসপাতালে আশি হাজার টাকা দিতে হবে।অপারেশন হল তার দুই দিন পর ডাক্তার হাসপাতাল থেকে ছুটি দিয়ে দিল, যখন ছুটি দিল তখনও আমার পিতার  ব্যাথা ছিল প্রচুর কিন্ত ডাক্তারে সাথে টাকার অংকটা চুক্তি  ভিত্তিক ছিল তাই সে আর হাসপাতালে রাখলো না তাড়াতাড়ি ছুটি দিয়ে দিল। যখন ছুটি দিল তখন দেখি চুক্তি টাকার চেয়েও বেশি  বিল  করে হাসপাতাল বসে আছে। তখন ডাক্তারের সাথে  যোগাযোগ করার জন্য মোবাইল নাম্বার চাইলাম  কেউ দিল না, অবশেষে অনেক  কষ্টে নাম্বারটা যোগার করে ডাক্তারকে বিষটি জানালে সে আমাদের অতিরিক্ত টাকা হাসপাতাললে পরিশোধ করার কথা বললেন। যাই হোক পরিশোধ করে  এ্যাম্বুলেন্স করে পিতাকে বাড়িতে  নিয়ে আসলাম।

বাড়িতে আসার পর তার কাটা  যায়গায় অনেক ব্যাথা হয়ে গেল। সে উঠে আর বসতে পারতো না, যে ডাক্তার অপারেশন করেছে সে আমাদের নিকটস্থ হাসপাতারে পনের দিন পর পর আছে। আমরা প্রায় দুই  মাস সেখানে এ্যাম্বুলেন্স করে তাকে দেখাই আর বাড়িতে আনি কিন্তু রোগের কোন প্রকার আরোগ্য লাভ হয় না, যাই  হোক  আবার সেই ডাক্তারের কথা অনুযায়ী আবার কিছু পরিক্ষা নিরীক্ষা করে বললেন আবার অপারেশন করতে হবে।কথাটি শুনে মনটা  খুবই খারাপ হয়ে গেল।  ও একটি কথা বলা হয়নি যে আমরা কোন ধনী লোক নই। এরই মধ্যে আমরা সবমিলিয়ে প্রায় ছয় লক্ষ টাকা ঋণ হয়ে আছি এর উপর আবার অপারেশন  করতে হবে। 

ডাক্তার সাহেবকে আমাদের অবস্থা বুছতে পেরে বললেন, সরকারী হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার জন্য। যাই হোক তার কথা অনুযায়ী একটি সরকারী হাসপাতালে ভর্তি হলাম অপারেশনও হলো। যে ডাক্তার গুলো অপারেশন করেছিল তাড়া রোগীদের ব্যাাপারে খুবই আন্তরিক ছিল। তাদের  চিকিৎসা আমার খুবই ভাল লেগেছে।যে চিকিৎসা আমি প্রাইভেট হাসপালে পাইনি তার চেয়ে আমি ভাল চিকিৎসা আমি সরকারি হাসপাতালে পেলাম। বিধায় আল্লাহর  রহমতে আমার  পিতা এখন আগের চেয়ে অনেকটা সুস্থ হয়েছে।

আসা যাক এখন মূল গল্পে, অপারেশনের জন্য ডাক্তর সাহেব  ওষুধের কিছু তালিকা দিল বললেন তা ক্রয় করে আনতে, আমি একটি ঔষুধের  দোকানে গিয়ে ঔষুধগুলো দাম জিজ্ঞাসা করলাম, দোকানদার জানালেন ৬ হাজার ৫০০ টাকা লাগবে।

আমি ঔষুধ সেখান থেকে না নিয়ে পিতার  খাবার দেওয়ার জন্য হাসপাতালের বেডে চলে আসলাম। তখন একটি লোক  এসে বললেন ভাই আমি  অমুক ঔষুদের দোকানের মালিক আমার দোকান থেকে যে কোন মাল আনবেন আমার দোকান থেকে ২০ থেকে ৩০% ঔষুদের মূল্য চেয়ে কম রাখবো।

যাক আসলাম  সেই  ঔষুধের  দোকানে উক্ত ঔষুধের তালিকাটি দিলাম বললাম ভাই দাম পড়বে কত? তিনি হিসাব দোকানের লোকটা হিসাব করে বললেন ভাই ৫ হাজার ২০০ টাকা লাগবে  যা পূর্বের দোকনের চেয়ে ১৩০০ টাকা কম বললেন। যাক মনে করলাম হয়তো এই দোকানে মাল গুলো বেশি  দাম রাখবে  না তাই তার দোকান থেকে ঔষুধ গুলো কিনলাম। পরবর্তীতে যে কোন ঔষুধ ডাক্তর লিখে তাই সেই দোকান থেকে আনি।

এরই মধ্যে হঠাৎ আমার একবার ঔষুধ কেনার সময় কিছুটা সন্দেহ হল,  তাই ঔষুধ গুলোর দাম জিজ্ঞাসা করে না নিয়ে চলে আসলাম অন্য আরেকটি দোকানে তখনি অন্য দোকনদার দেখি সেই ঔষুধ গুলোর দাম আরো  কম বললেন, পড়লাম  এক সমস্যা যাক ঔষুধ  তো নিতে হবে। কাকে বিশ্বাস করবো সবাই তো দেখি বিশ্বাসের সাথে খেলা  করছে।

আজকে পিতাকে হাসপাতালে দেখতে গিয়ে দেখি কিছু ঔষুধ লিখেছে কিনতে হবে, কোথায় থেকে কিনবো কাউকে তো বিশ্বাস করতে পারছি না। এমনিতে প্রায় সাত লক্ষটাকা ঋণ মাথায় তারপর পিতা অসুস্থ, মায়ের ও মাথা ব্যাথার ও হাঁপানী রোগ, দাদীর বার্ধ্যক্য জনিত রোগ, স্ত্রী ও অসুস্থ, যেন আমাদের বাড়িটাই একটা  মিনি হাসপাতাল এ পরিনত হয়ে গেছে। তারপর আবার প্রতি পদক্ষেপে হয়রানি আর হয়রানি। ফিরে আসি আসল কথায়, 

প্রথমে  একটি দোকানে ঔষুধ গুলোর দাম জিজ্ঞেস করলাম, দোকনদার বললেন ভাই ১১৮০ টাকা লাগবে; তারপর আরেকটি দোকানে গেলাম সেই  দোকানদার বললেন ভাই ১৩০০ টাকা লাগবে; তার পর আরেকটি দোকনে গেলাম সেই দোকানদার বললেন ভাই ১১০৫ টাকা লাগবে।

তারপর বিরক্ত হয়ে আর কোন দোকানে না গিয়ে ভঙ্গ মনে ঔষুধ  নিয়ে চলে আসলাম।দেখে পাঠকবৃন্দ মাত্র এগারোশত টাকার ঔষুধে প্রাই  দুইশত টাকা  কম বেশি বলছেন দোকান গুলোতে, যে সবচেয়ে কম বলেছে সে কি তার লাভ না করেই ঔষুধ গুলো বিক্রয় করেছে? নিশ্চই না সে তো কিছু না কিছু লাভ করেছিই। এই হল আমাদের মানুষের বর্তমান  অবস্থা যেখানে একটি মানুষ বিপদে পড়ে আছে সেই কথাটি  যেনেও মানুষ গুলো তাদের ব্যাবসায়ের নীতি ভুলে গিয়ে শুধু টাকা কেই আপন করে নিচ্ছে। আরো কিছু বলব পড়ে.....

No comments

Powered by Blogger.